দলের প্রতিষ্ঠাতাঃ মোঃ আবু জাফর (বাবু-জী)
দলের ব্যাংক একাউন্ট———
অনলাই একাউন্ট————–
দলের যোগাযোগ————–
আল্লাহ সর্বশক্তিমান, আল্লাহ শুভসংবাদদাতা,
আল্লাহ জ্ঞান ও প্রজ্ঞাময়, আল্লাহ জ্ঞানের ভান্ডার।
আল্লাহ পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়,
আল্লাহ সর্বজ্ঞানের অধিকারী।
আল্লাহ চিরস্থায়ী ও চিরঞ্জীব,
আল্লাহ ধৈর্যশীল ও মহান।
আল্লাহ মহা-অনুগ্রহশীল, প্রতিশ্রুতির রক্ষক,
আল্লাহ মহাশ্রোতা, মহাদ্রষ্টা, সকল কর্মের স্বাক্ষী।
আল্লাহ সর্বাত্মক শক্তি দাতা,
মানবের শক্তিকে করেন নম্র ও নিবেদিত।
আল্লাহ চিরঞ্জীব, অনাদী,
তন্দ্রা ও নিদ্রা তাঁকে স্পর্শ করে না।
আল্লাহ অসংখ্য ঐশী গ্রন্থের স্রষ্টা,
আল্লাহ দয়ালু, মায়াময়, মেহেরবান, মহান, গরিয়ান।
🌺 আল্লাহ-ই সর্বশক্তিমান।
🤲 হে আল্লাহ! আপনি আপনার প্রশংসায় নিজেই প্রশংসিত।
🍃 খাবার হজম না হলে — রোগ বাড়ে।
🗣️ কথা হজম না হলে — তর্ক বাড়ে।
🏆 প্রশংসা হজম না হলে — অহংকার বাড়ে।
🔒 গোপনীয়তা হজম না হলে — সংকট বাড়ে।
💰 টাকা-পয়সা হজম না হলে — স্বার্থপরতা বাড়ে।
🗯️ নিন্দা হজম না হলে — শত্রুতা বাড়ে।
🌈 সুখ-শান্তি হজম না হলে — অশান্তি ও পাপ বাড়ে।
⚖️ সত্য কথা হজম না হলে — বিপদ বাড়ে।
যে মানুষ ধৈর্য ধরে, অহংকার ত্যাগ করে, সত্যকে ধারণ করে এবং শান্তি চায়—
সে-ই প্রকৃত জ্ঞানী, সে-ই আল্লাহর প্রিয় বান্দা। 🤲
উপরের সূত্রগুলির প্রতি স্বদেশ বাংলা দলের সকল নেতা-কর্মীকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে,
এবং সূত্রগুলো মেনে চলা বাধ্যতামূলক।
হয়তো অনেকে এখনো এই সূত্রগুলোর গভীর অর্থ বুঝে উঠতে পারেননি —
তবে এ বিষয়ে স্বদেশ বাংলা দলের বর্ধিত সভায় বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
সূত্রগুলো অনেকের কাছে হয়তো সহজ মনে হতে পারে,
কিন্তু বাস্তবে এগুলোর ভেতরেই দেশ পরিচালনার কৌশল লুকিয়ে আছে।
অতএব, অত্যন্ত বিনয়ী মনোভাব ও ধৈর্য সহকারে নিচের লেখাগুলো পড়ুন,
এবং যেগুলোর অর্থ অজানা — সেগুলো জানার চেষ্টা করুন।
🔹 মূল উদ্দেশ্য:
স্বদেশ বাংলা দলের প্রতিটি সদস্য যেন জ্ঞান, ধৈর্য, নীতি ও সামাজিক দায়িত্ববোধে পরিচালিত হয়।
রাষ্ট্র, সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি, রাজনৈতিক দল, নেতা, গঠনতন্ত্র
এই নামগুলো একেবারেই সাধারণ ও পরিচিত। ছোট-বড় সবাই এই শব্দগুলোর সাথে মোটামুটি পরিচিত।
তবে দুঃখজনকভাবে, অনেকেই এই নামগুলোর প্রকৃত অর্থ জানেন না, আর জানলেও অনেক রাজনৈতিক দল ও তাদের নেতারা সেই অর্থ মেনে চলেন না এমনকি বাস্তবায়নও করেন না।
এই নামগুলোর অর্থ কী, এবং রাজনৈতিক দলগুলো আসলে কী করে—সেই পার্থক্যটি আমি খুব সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরছি।
যদি নামের প্রকৃত অর্থ অনুযায়ী দেশের জনগণের স্বার্থে দেশ পরিচালনা না করা হয়,
তাহলে কিয়ামত পর্যন্ত এই দেশে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না।
রাষ্ট্র: সাধারণত রাষ্ট্র বলতে বোঝায় — ভূ-খণ্ড, দেশ, স্বদেশ, মাতৃভূমি, জন্মভূমি, মানচিত্র ও সংলগ্ন বিষয়াদি।
এখন প্রশ্ন ওঠে — রাষ্ট্রের মালিক কে? অনেকেই বলবে, রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। কিন্তু প্রশ্ন হলো — কি সত্যিই রাষ্ট্রের মালিক জনগণ, নাকি রাষ্ট্রের প্রজা (নাগরিক) হলো জনগণ?
মূলত:
রাষ্ট্রের মালিক হলো ভূ-খণ্ড।
ভূ-খণ্ডের মালিকত্বকে ধারণ করে যে রূপ—সে হলো রাষ্ট্রের মানচিত্র (অর্থাৎ রাষ্ট্রের ভূ-স্বত্ত্ব ও শ্রেণিবিভাগ)।
আর যেসব মানুষ ভূ-খণ্ডে বাস করে, কৃষিকাজ করে বা সেখানে বসবাস করে—তাই হলো রাষ্ট্রের প্রজা, অর্থাৎ জনগণ।
এখানে বিভ্রান্তি হওয়া স্বাভাবিক। কারণ বাস্তবে ভূ-খন্ডের সর্বশেষ মালিক মহান আল্লাহ — এবং সেই ভূ-খন্ডে বসবাসকারী জনগণ সেই ভূ-খন্ডের প্রজা।
তাই যদি কেউ দাবি করে তিনি রাষ্ট্র বা ভূ-খণ্ডের ‘একক মালিক’—তাহলে নেলসন ম্যান্ডেলা বা ডা. মাহাথির বিন মোহাম্মদের মতো প্রকৃত ভিত্তিতে জনমুখী রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব হবে না। অন্যদিকে, যদি তুমি রাষ্ট্রকে জনগণের (প্রজার) মালিকানা কিংবা জনগণের সেবা হিসেবে বিবেচনা করো, তাহলে জনগণের অধিকার বজায় রেখে সমতাভিত্তিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
তাৎপর্য:
যদি তুমি দলের প্রধান বা রাষ্ট্রের প্রধানকে ‘উন্নততর মালিক’ ধরো, তাহলে সাধারণ মানুষের অধিকার, ন্যায়-মামলা, সু-শাসন প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হবে — কারণ শক্তি কেন্দ্রীভূত হলে ক্ষমতার অপব্যবহার হয়।
কিন্তু যদি তুমি নিজেকে জনসেবক—জনগণের ‘দাস’ বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে ধরা শুরু করো, তখনই জনগণের অধিকার, ন্যায় বিচার, সু-শাসন ও সুষ্ঠু চিকিৎসাসহ পূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
ইতিহাস থেকে আমরা দেখি: বহু রাজনৈতিক নেতা নিজেরেকে রাষ্ট্রের ‘স্বত্বাধিকারী’ দাবি করে চলেছেন; ফলে তারা স্বেচ্ছাচারী শাসন চালিয়েছেন — যার কারণে কখনো দেশের ভূ-খণ্ডে ফাটল, মানচিত্রে আঘাত, সংবিধান লঙ্ঘন কিংবা গণতান্ত্রিক ক্ষতি ঘটেছে। সেসব ক্ষেত্রে পরিবারতন্ত্র বা ব্যক্তিত্বতন্ত্রের কল্যাণে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়ে ওঠে না।
স্বদেশ বাংলা দলের নীতি (সংক্ষিপ্ত):
আমরা শাসক নই — আমরা জনগণের সেবক।
আমরা শোষক নই — আমরা সকলের অধিকারের পক্ষে।
সকল নাগরিকের বাক-স্বাধীনতা, নারীর অধিকার ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
সমাজ:
সমাজ বলতে বোঝায়—নির্দিষ্ট কিছু মানুষ একত্রে বসবাস করা, একত্রে সমাজ গঠন করা এবং তাদের ইচ্ছা ও প্রয়োজনের বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি গ্রাম বা শহরে মিলেমিশে জীবনযাপন করা।
প্রশ্ন আসতে পারে—এই সমাজের মালিক কে? প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, নাকি জনগণ?
অনেকে বলবেন, সমাজের মালিক প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু বাস্তবে সমাজের প্রকৃত মালিক এরা কেউ নয়।
সমাজের প্রকৃত মালিক হলো—ঐক্য, একতা ও সততা।
যদি মনে করা হয় ঐক্য, একতা ও সততা সমাজের মালিক নয়, তাহলে প্রশ্ন আসে—দেশে তো অসংখ্য সমাজ আছে, একেক সমাজে একেক রকম ঐক্য, একতা ও সততা দেখা যায়। সেক্ষেত্রে একেক সমাজে আলাদা আইন প্রয়োগ করে কখনোই সুখ, শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
সত্যিকার অর্থে, সকল সমাজের মূল মালিক হলো রাষ্ট্র বা ভূখণ্ডের সংবিধান।
এই কারণেই স্বদেশ বাংলা দলের নীতি হলো—বাংলাদেশের ভূখণ্ডে বসবাসরত সকল ধর্ম, জাতি ও বর্ণের মানুষকে নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রীয় সমাজ গঠন করা। এই সমাজে ছোট-বড়, ধনী-গরিব, জাতি বা ধর্ম নির্বিশেষে সকল নাগরিকের অধিকার হবে সমান।
প্রত্যেকে নিজের ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে, কিন্তু সবার নাগরিক অধিকার থাকবে অভিন্ন ও সুরক্ষিত।
রাজনীতি:
রাজনীতি বলতে বোঝায়—রাষ্ট্রের নীতি, রাষ্ট্রের সংবিধানের নীতি, রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক আয়-ব্যয়, রাষ্ট্রের আদর্শ ও সংবিধান অনুযায়ী সকল বিষয়ে সুষ্ঠু বণ্টন, রাষ্ট্রের মূল্যবোধ রক্ষা, ভূখণ্ডের অখণ্ডতা বজায় রাখা এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করা।
এখন প্রশ্ন আসে—বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা রাজনীতি বলতে কী বোঝেন?
তাদের অনেকেই মনে করেন, রাজনীতি মানে দলীয় একটি পদ পাওয়া অথবা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করা।
এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।
রাজনীতি শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো — জ্ঞানের নীতি।
বুঝতে একটু কঠিন লাগছে? চল সহজভাবে দেখি—
রাজনীতি কে করে?
👉 মানুষ।
মানুষ রাজনীতি কী দিয়ে করে?
👉 জ্ঞান ও বিবেক দিয়ে।
তাহলে রাজনীতির আসল অর্থ দাঁড়ায় — জ্ঞানের নীতি বা বিবেকের নীতি।
যারা জ্ঞানহীন, যারা বিবেকহীন—তারা ক্ষমতায় গিয়ে জ্ঞানের প্রতি অটল না থেকে ব্যক্তিগত নীতি, দলীয় নীতি, অর্থনীতি, ব্যবসায়িক নীতি, দখল নীতি, বদলি নীতি, টেন্ডার নীতি, ক্ষমতার নীতি, প্রতিহিংসার নীতি, অর্থ পাচারের নীতি, স্বৈরশাসনের নীতি, বা পরিবারতন্ত্রের নীতি চালু করে ফেলে।
ফলে রাজনীতি তখন আর জ্ঞানের নীতি থাকে না—বরং তা হয়ে যায় পেটের নীতি বা স্বার্থের নীতি।
আমাদের নীতি স্পষ্ট —
রাজনীতির মূল আদর্শ হলো জ্ঞানের নীতি বা বিবেকের নীতি।
আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রে এই জ্ঞানের নীতি ও বিবেকের নীতি প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
আমরা কখনোই জ্ঞানের নীতি পরিবর্তন করে অনৈতিক নীতি চালু করবো না।
তাই আমরা কোনো সমাজবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী বা সংবিধানবিরোধী কাজ করবো না।
রাজনৈতিক:
রাজনৈতিক বলতে বোঝায় — রাষ্ট্র, দেশ, রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানসমূহ, রাষ্ট্রের সম্পদ, রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট নীতিমালা, রাজনৈতিক আদর্শ এবং রাজনৈতিক চরিত্র ও গুণাবলিকে।
এখন প্রশ্ন আসে — রাজনৈতিক বলতে আমরা কী বুঝি?
অনেকেই মনে করেন, রাজনৈতিক মানেই একটি রাজনৈতিক দল বা সংগঠন।
কিন্তু এটি সঠিক নয়।
‘রাজনৈতিক’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো — জ্ঞানের আদর্শ বা জ্ঞানের গুণাবলী।
অনেকে এই অর্থ বুঝতে পারেন না বা মানতেও চান না।
তাহলে আসুন সহজভাবে দেখি —
জ্ঞান কয় প্রকার?
জ্ঞান সাধারণভাবে পাঁচ প্রকার:
১. জ্ঞান
২. প্রাকৃতিক (স্বাভাবিক) জ্ঞান
৩. বিশেষ জ্ঞান
৪. স্থূল জ্ঞান
৫. সূক্ষ্ম জ্ঞান
সংক্ষেপে দুটি উদাহরণ দিই —
ধরা যাক, আপনার বাসায় একটি ছোট বাচ্চা আছে। একদিন নতুন একজন অতিথি আসলেন, আর সেই অতিথির সামনেই বাচ্চাটি খেলা করতে করতে হঠাৎ মলত্যাগ করল।
এখন আপনি কি করবেন? বাচ্চাটিকে মারবেন? না কি লজ্জা পাবেন?
আসলে কিছুই করার নেই — কারণ বাচ্চাটির সেই জ্ঞান এখনো হয়নি।
অর্থাৎ, বাচ্চাটির স্বাভাবিক জ্ঞানের অভাবেই এমনটি ঘটেছে।
নিউটন একটি সূত্র আবিষ্কার করেছিলেন — “মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে উপরের জিনিস নিচে পড়ে।”
আপনি যদি হাজার বছর গবেষণা করেন, তবুও এই সূত্রের বিপরীতে কোনো নতুন সূত্র দিতে পারবেন না।
অর্থাৎ, নিউটনের এই সূক্ষ্ম জ্ঞান ছিল স্থায়ী জ্ঞান।
এখন পার্থক্যটা হলো —
বাচ্চাটির স্বাভাবিক জ্ঞান কয়েক বছর পর পরিবর্তন হয়ে গেলেও, নিউটনের সূক্ষ্ম জ্ঞান কখনো পরিবর্তন হয় না।
তাই স্বাভাবিক জ্ঞান অস্থায়ী, কিন্তু সূক্ষ্ম জ্ঞান স্থায়ী।
আপনি যদি সূক্ষ্ম জ্ঞান দিয়ে রাজনীতি করেন, তাহলে আপনি হবেন মাদার তেরেসা, নেলসন ম্যান্ডেলা, বা ড. মাহাথির মোহাম্মদ–এর মতো মানুষ।
কিন্তু আপনি যদি স্বাভাবিক জ্ঞান দিয়ে রাজনীতি করেন, তাহলে আপনার পরিণতি হতে পারে গাদ্দাফি, মুরসি, বাশার আল-আসাদ, বা আমাদের দেশের অতীতের স্বৈরশাসকদের মতো।
আমাদের নীতি পরিষ্কার —
আমরা সূক্ষ্ম জ্ঞানের আদর্শ অনুসরণ করে বাংলাদেশকে একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
যেদিন আমরা সত্যিকারের সূক্ষ্ম জ্ঞানের পথে রাষ্ট্র পরিচালনা করব,
সেদিন আমাদের বলতে হবে না—“আমরা বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি”;
বরং বিশ্ব নিজেই আমাদের আদর্শের কারণে মাথা উঁচু করে আমাদের দিকে তাকাবে।
নেতা:
নেতা বলতে বোঝায় — জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা, জাতিকে সঠিক পথে পরিচালনা করা, জাতির ইচ্ছা বাস্তবায়ন করা, জাতিকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী করা, তাবেদারী দেশগুলোর আগ্রাসন থেকে দেশকে রক্ষা করা, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখা এবং দেশের প্রতিটি মানুষের জীবন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এসবই একজন প্রকৃত নেতার গুণাবলী ও আদর্শ।
এখন প্রশ্ন হলো — আমাদের দেশের নেতাদের গুণাবলী বা আদর্শ কী?
দুঃখজনকভাবে, বাস্তব চিত্রটি ভিন্ন।
আমাদের দেশের অনেক নেতার বৈশিষ্ট্য হলো —
জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা অস্বীকার করা,
নিজ দলের ইচ্ছা ও স্বার্থ বাস্তবায়নে ব্যস্ত থাকা,
ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ষড়যন্ত্রমূলক কৌশল গ্রহণ করা,
স্বার্থপর ও সুবিধাবাদী ব্যক্তিদের ইচ্ছা বাস্তবায়ন করা,
তাবেদারী দেশগুলোর ইচ্ছা ও নির্দেশে নীতি নির্ধারণ করা,
প্রশাসনে নিজেদের লোক বসানোর চেষ্টা করা,
টেন্ডারবাজি, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারে জড়ানো,
ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যক্তিগত সম্পদ গড়া,
এবং কখনও কখনও সহিংসতা ও খুন-খারাপিতে লিপ্ত হওয়া।
এ ধরনের নেতারা প্রকৃত অর্থে নেতা নন —
তারা হয়ে ওঠেন জাতির শত্রু বা জাতির দালাল।
আমাদের নীতি স্পষ্ট ও দৃঢ় —
প্রতিটি মানুষকে মূল্যায়ন করা,
সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্মান দেওয়া,
গুণী মানুষদের গুণাবলী তুলে ধরা,
উপকারী মানুষদের অবদান স্বীকার করা,
সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা,
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা,
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা,
তাবেদারী দেশগুলোর ষড়যন্ত্র থেকে দেশকে রক্ষা করা,
এবং স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব দৃঢ়ভাবে সংরক্ষণ করা।
রাজনৈতিক দল:
রাজনৈতিক দল বলতে বোঝায় — এমন সংগঠন যা দেশের সংবিধান বাস্তবায়ন করে, দেশের ভূখন্ডের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল জাতি-গোষ্ঠির নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কল্যাণ নিশ্চিত করে, এবং দেশের সকল নাগরিকের সমান অধিকার রক্ষা করে। এগুলোই একটি রাজনৈতিক দলের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
প্রশ্ন ওঠে আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্য কি?
বিগত সময়গুলোতে আমরা দেখেছি—অনেকে ক্ষমতায় এসে নিম্নোক্ত অসঙ্গত আচরণ করে:
সংবিধান বাস্তবায়ন না করে বারবার সংবিধানে হস্তক্ষেপ ও পরিবর্তন করা,
নিজেদের সুবিধার্থে বিভি্নধরনের অধ্যাদেশ জারি করা,
মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা ও মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করা,
অন্যান্য দলের কার্যকলাপ বাধাগ্রস্ত করা এবং জোট গঠন করে স্বার্থ সুরক্ষা করা,
সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার থেকে অনেককে বঞ্চিত করা,
নিজের লোকদের প্রশাসনে বা প্রতিষ্ঠানে বসানো, টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতিতে লিপ্ত হওয়া,
আইনের শাসন ও বিচারব্যবস্থাকে দুর্বল করা,
দেশের সংবিধানকে কেবল বইয়ের পাতায় পরিণত করা।
এসব অনিয়মের কারণে দেশের সংবিধান, ভূখন্ড ও স্বাধীন সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়ে। ফলে কিছু পরিমাণে তাবেদারী শক্তিগুলো দেশের স্বার্থে হস্তক্ষেপ করে, নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের ওপর প্রভাব পড়ে।
যখন জনগণ দীর্ঘদিন অবিচার-অত্যাচার সহ্য করতে পারে না, তখন তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণঅভ্যুত্থান ঘটায়; এর ফলে দেশে সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠা পেতে পারে — যেমন ১৯৭৫ সালের পর ও পরবর্তী সময়ের বিভিন্ন সামরিক প্রশাসনের উদাহরণ। এসব ঘটনা দেশের রাজনৈতিক ধারাকে ভেঙে দেয় ও জনগণের দুরবস্থা বৃদ্ধি করে।
স্বদেশ বাংলা দলের মূল নীতি ও প্রতিশ্রুতি হচ্ছে—
বেসরকারি বা পুরনো অনুচিত সংবিধান ধারণকে পরিবর্তন করে একটি নতুন, মৌলিক ও গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ন,
নতুন সংবিধানের ভিত্তিতে দেশের পরিচালনা,
স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা; বিদেশী কোনও রাষ্ট্রের স্বার্থে দেশের বিরুদ্ধে চুক্তি না করা,
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জীবন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা,
দেশের সামাজিক, মানসিক ও আর্থিক স্বাস্থ্য (সু-চিকিৎসা) নিশ্চিত করা,
আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা,
গুম, খুন, চুরি, ডাকাতি, চাঁকাচাঁকি, ঘুষ, অর্থপাচার, অনিয়মপূর্ণ বদলি ও প্রমোশন অস্থায়ী ও স্থায়ী সকল অনিয়ম দূর করা,
এক কথায় সব ধরনের অবিচার, অন্যায় ও ব্যভিচার বন্ধ করা।
দলের গঠনতন্ত্র:
দলের গঠনতন্ত্র বলতে বোঝায় — দলের নিয়মকানুন, কাঠামো, কার্যক্রম, সত্যতা, নীতি-আদর্শ, দল পরিচালনার পদ্ধতি, অভ্যন্তরীণ নিয়মাবলী, সদস্যপদ, দলীয় প্রধানের ক্ষমতা প্রয়োগ, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া এবং দলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলি।
“গঠনতন্ত্র” শব্দটি এসেছে দুটি শব্দ থেকে — গঠন + তন্ত্র।
গঠন মানে: সুন্দর
তন্ত্র মানে: বাস্তবায়ন
অতএব, “গঠনতন্ত্র” শব্দের মূল অর্থ হলো — “সুন্দর বাস্তবায়ন।”
অর্থাৎ, গঠনতন্ত্র বলতে এমন একটি কাঠামো বা নীতি বোঝায় যার মাধ্যমে সুন্দরভাবে কোনো দলের আদর্শ ও কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়।
রাষ্ট্রের সংবিধান যেমন রাষ্ট্র পরিচালনার সত্য,
ঠিক তেমনি দলের গঠনতন্ত্র হলো দলের সংবিধান — এটিই দলের সত্য।
কিন্তু বাস্তবতা হলো —
যেমনভাবে রাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী কেউ পুরোপুরি রাষ্ট্র পরিচালনা করে না,
তেমনি দলগুলোও তাদের নিজস্ব গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দল পরিচালনা করে না।
প্রশ্ন হলো — গঠনতন্ত্রের অর্থ যদি “সুন্দর বাস্তবায়ন” হয়, তাহলে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে না কেন?
উত্তর:
কারণ অনেক দলেরই—
সুন্দর বাস্তবায়নের কোনো কার্যকর নীতিমালা নেই,
দেশ ও জাতিকে পুনর্গঠনের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেই,
নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিয়ে সুস্পষ্ট নীতিমালা নেই,
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার নীতি নেই,
জনগণের সুখ-শান্তি, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, বাসস্থান ও সু-চিকিৎসা নিশ্চিত করার বাস্তব পরিকল্পনা নেই,
বেকার, প্রতিবন্ধী, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, গৃহহীন, ভূমিহীন, শিক্ষাহীন জনগোষ্ঠীর জন্য সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি নেই।
তাদের আছে শুধু গঠনতন্ত্রে লেখা সুন্দর কিছু বাক্য — যা বাস্তব প্রয়োগে অনুপস্থিত।
এ ধরনের দলগুলোর গঠনতন্ত্র প্রকৃত অর্থে “সুন্দর বাস্তবায়ন” নয়, বরং মনগড়া ও গতানুগতিক কাগুজে গঠনতন্ত্র।
স্বদেশ বাংলা দলের মূল নীতি হলো — “সুন্দর বাস্তবায়ন।”
এই সুন্দর বাস্তবায়নের জন্য আমরা দেশের জন্য স্থায়ী ১০০ বছরের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করব, যার লক্ষ্য হবে দেশের পূর্ণ পুনর্গঠন।
এই ১০০ বছরের স্থায়ী নীতিমালা আমরা প্রকাশ করব স্থায়ী নির্বাচনী ইস্তেহারে, ইনশাআল্লাহ।
আমরা বিশ্বাস করি — এই ঐতিহাসিক গঠনতন্ত্রের ইস্তেহার অন্য সব রাজনৈতিক দলের চিন্তাকে নাড়িয়ে দেবে, এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্রে সাধারণত সুন্দর নীতি ও আদর্শের কথা লেখা থাকে।
কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়—সেগুলোতে যে কুপ্রবৃত্তি, অন্যায় ও নিপীড়নের কর্মপন্থা লেখা থাকে না; তবুও ক্ষমতায় গেলে অনেকে নিম্নলিখিত কাজগুলো করে থাকেন:
সংবিধান বারবার পরিবর্তন করা,
নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী অগোছালো বা স্বার্থান্বিত অধ্যাদেশ জারি করা,
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হামলা, মামলা, গুম বা হত্যা করা,
জমি, বাড়ি, নৌরাস্তাসহ সরকারি ও বেসরকারি সম্পদ দখল করা,
কৃষিজমি, বাগান, মাছের ঘের, মিল-কারখানা ইত্যাদি দখলের মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও দলীয় সুবিধা অর্জন করা,
টেন্ডার বাণিজ্য, বদলিতে অনিয়ম, প্রমোশন-ব্যবসা, ঘুষ-চাঁদা ও অর্থপাচার করা,
ক্ষমতায় থেকে ব্যক্তিগতভাবে আলিশান জীবনযাপন করা,
নিজ দলের কর্মীদের রক্ষা করা ও প্রতিপক্ষের কর্মীদের চাপিয়ে দেয়া — ইত্যাদি অসংখ্য অনৈতিক কাজ।
এসব কুপ্রথা সাধারণত গঠনতন্ত্রে লেখা থাকে না; গঠনতন্ত্রে থাকে কমিটি-গঠন, সদস্যপদ, নেতা-নির্বাচন ও নেতৃত্বের ক্ষমতার নিয়ম, দলীয় প্রতীকের বিধান ইত্যাদি কাগজজবাখানা। কিন্তু বাস্তব প্রয়োগে দেশের পূর্ণগঠন বা দেশের মানুষের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার মতো কার্যকর নীতি থাকেনা।
তাই প্রশ্ন উঠে—এইসব দল কি জাতির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করছে? তাদের হাতে কি দেশ ও জাতি কখনোই নিরাপদ?
স্বদেশ বাংলা দলের নীতি (সংক্ষেপে)
আমাদের গঠনতন্ত্রে যা লেখা থাকবে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলেও সেটাই আমরা বাস্তবায়ন করবো।
গঠনতন্ত্রে যা থাকবে না, আমরা সেটি করবো না—এটাই আমাদের অটল প্রতিশ্রুতি।
এই কারণেই আমরা ১০০ বছরের স্থায়ী পরিকল্পনা নিয়েই ইস্তেহার প্রণয়ন করেছি। এ পরিকল্পনা ও দল গঠন করেছি দেশের বর্তমান দুঃচিন্তার, অনিয়ম ও জাহেলিয়াত শাসন থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করার জন্য — ইনশাআল্লাহ।
অতএব জনসাধারণের প্রতি বিনীত অনুরোধ —
বাংলাদেশ স্বদেশ বাংলা দলের নীতি, আদর্শ, সততা, গঠনতন্ত্র ও দেশের পূর্ণগঠনের স্থায়ী পরিকল্পনা সম্পর্কে জানুন; ভাবুন; আলোচনা করুন; তারপর আপনার বিবেক ও জ্ঞান অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিন। অন্য দলগুলোর সঙ্গে স্বদেশ বাংলা দলের পার্থক্য খতিয়ে দেখুন — তারপর যদি আপনি মনে করেন, আমাদের লক্ষ্যের প্রতি আপনি বিশ্বাসী, তবে দলকে সমর্থন করুন। আমিন।
আমরা যে নামগুলোর সংজ্ঞা ও অর্থ ব্যাখ্যা করেছি, সেগুলো হলো—
(১) রাষ্ট্র, (২) সমাজ, (৩) রাজনীতি, (৪) অর্থনীতি, (৫) রাজনৈতিক, (৬) দল, (৭) গঠনতন্ত্র, এবং (৮) মন্তব্য।
এই শব্দগুলোর সাথে দল, সমাজ, গঠনতন্ত্র ও রাষ্ট্র—সবকিছুই ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত ও একে অপরের পরিপূরক।
তাই আমরা নামের নেতিবাচক অর্থ পরিহার করে, ইতিবাচক অর্থগুলোকে মূল্যায়ন করেই
আমাদের স্বদেশ বাংলা দলের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করেছি।
আমরা ঘোষণা করছি ১৯৭১ সালের পাক হানাদার বাহিনী বাংলাদেশি বীর বাঙালি জাতির ওপর অবিচার, অত্যাচার, অনাচার, জুলুম-নির্যাতন ও শোষণ চালিয়েছিল। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গভীর রাতে বুদ্ধিজীবী, কবি, লেখক, সাহিত্যিক, গুণী, জ্ঞানী, সাংবাদিক, নারী-পুরুষ, ছাত্র ও অন্যান্য সাধারণ মানুষের ওপর গণহত্যা চালানো হয়। এই গণহত্যার প্রতিবাদে বীর বাঙালি জাতি পাক হানাদার পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম ঘোষণা করে — অর্থাৎ স্বাধীনতা ঘোষণা করে।
নয় মাস পুড়ে জ্বালানো যুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ নিহত হয়েছিল বলে জানানো হয়; প্রায় ২ লক্ষ নারী ইজ্জত-হানি ভোগ করেছেন; লক্ষ লক্ষ বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে; লক্ষ লক্ষ মানুষ মা-বাবা, সন্তান ও আত্মীয়স্বজন হারিয়ে আহত বা পঙ্গু হয়েছেন। এই সব হত্যা-নির্যাতন ঘটিয়েছিল পাক হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আল বদর ও আল সাংগঠনিক বাহিনীগণ। পাক বাহিনী ছিল পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী; অন্য তিনটি—আল বদর, আল সামস (আল-স্যাস?) ও রাজাকার—তৎকালীন স্বাধীনতা বিরোধী সংগঠনের অংশ ছিল; এদের মধ্যে জামায়াতে ইসলাম সম্পর্কিত কিছু অংশ স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে পরিচিত ছিল। যুদ্ধকালে জামায়াতে ইসলামের কিছু অংশের অত্যাচার, জুলুম ও হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত বর্বর ছিল।
অন্যদিকে, বীর বাঙালিরা ভারতের আশ্রয়ে গিয়েছিলেন; আসামের জঙ্গলে অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে দেশে ফিরে এসে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের প্রাণ-পরিচয় বিসর্জন করে পাক হানাদার বাহিনী ও সহযোগী বাহিনীর বিরুদ্ধে নয় মাস লড়াই চালিয়ে ১৬ ডিসেম্বার ১৯৭১-এ বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সেই আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন সার্বভৌমত্ব, স্বাধীন ভূখণ্ড এবং স্বাধীন বাংলাদেশ লাভ করেছি — আমাদের লাল-সবুজের বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে আমরা গর্বিত, কৃতজ্ঞ ও আনন্দিত।
আমরা ঘোষণা করছি — যারা স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন, যেসব নারী তাদের মর্যাদা হারিয়েছেন, যাঁরা শহীদ হয়েছেন — তাদের সকলের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি; যারা এখনও বেঁচে আছেন, তাদের প্রতি আমরা সম্মান ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
আমরা বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি:
১৯৪০ সালে পাকিস্তানের লাহোরে ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব উত্থাপনকারী আবুল কাশেম শের-ই-বাংলা এ. কে. ফজলুল হক সাহেবকে;
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মাওলানা আঃ হামিদ খান ভাষানী সাহেবকে;
স্বাধীন রাষ্ট্রের জনক—বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবকে; এবং স্বাধীনতার স্থপতি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেবকে;
স্বাধীনতার অনুপ্রেরণাদায়ী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে;
সেইসাথে যেসব সেনা-নৌ-বিমান ও পুলিশ বাহিনী এবং সকল পেশার মানুষ স্বাধীনতার জন্য অংশ নিয়েছিলেন বা সহযোগিতা করেছিলেন, তাদের সবাইকে আমরা সম্মান জানাই।
আমরা আমাদের মাতৃভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই — সালাম: রফিক, সফিক, বরকত, জব্বার এবং অন্যান্য সকল শহীদদের প্রতি। আমাদের কৃতজ্ঞতা ও আজীবন সম্মান তাদের প্রতি অটুট।
আমরা অঙ্গীকার করি — যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ড ভূখণ্ড পেয়েছি, তাদের সেই ত্যাগের মূল্যায়ন করব। বর্তমান ও পরবর্তী প্রজন্ম মুক্তিযোদ্ধাদের মতোই নিজের জীবন ও রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ভূখণ্ডিক অখণ্ডতা ও গণতন্ত্র রক্ষা করবে—ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য, আমরা যুদ্ধকালে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানাই। তবে আমরা বলতেই চাই যে, যুদ্ধকালীন ও পরবর্তী সময়ে ভূখণ্ড সংক্রান্ত কিছু জটিলতা ও আর্থিক হিসাব-নিকাশ নিয়ে আমাদের মধ্যে অভিযোগ ও তীব্র অনুভূতিও রয়েছে। ১৯৭১ সালের তুলনায় বাংলাদেশের পুরনো কিছু সম্পদ ও ভূখণ্ড নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন আজও আলোচনা সৃষ্টি করে। এই কারণগুলোকে আমাদের স্বদেশ বাংলা দলের গাইডলাইনে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। মূল লক্ষ্য হলো ১৯৪৭ সালের শের-ই-বাংলা এ. কে. ফজলুল হক সাহেবের লাহোর প্রস্তাবের প্রেক্ষাপট স্মরণ করে বাংলাদেশের ন্যায্য ভূখণ্ড, অখন্ড বাংলা ও অভিকাংশের ন্যায্য দাবিগুলো পুনর্বিবেচনা ও উদ্ধার করা।
বাংলাদেশ স্বদেশ বাংলা দল (স্বদেশ বাংলা)
ইংরেজিতে এর নাম হতে পারে Swadesh Bangla Party অথবা Bangladesh Swadesh Bangla Party।
“স্বদেশ বাংলা” শব্দগুচ্ছ ইংরেজিতে অনুবাদ করলে এর অর্থের সঙ্গে বাংলাদেশের দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নামেরও আংশিক মিল পাওয়া যায়। তবে আমাদের মাতৃভাষা বাংলা এবং মাতৃভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রেখে আমরা দলের নাম শুধুমাত্র বাংলায় ব্যবহার করছি।
বাংলা ভাষা ও শহীদদের আত্মমর্যাদার প্রতি সম্মান জানিয়ে আমাদের দলের নাম রাখা হয়েছে —
বাংলাদেশ স্বদেশ বাংলা দল (স্বদেশ বাংলা)।
দলের প্রধান কার্যালয় থাকবে রাজধানী ঢাকা-তে।
কার্যালয়ের দায়িত্বে থাকবেন দলের প্রধান, অথবা স্থায়ী কমিটির প্রধান, অথবা উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান।
একই ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন; এরপর নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে।
✍️ লেখক: আবু জাফর (বাবু-জী)
আমার স্বদেশ বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি রে,
আমরা শক্তি, আমরাই বল — সবাই মিলে সামনে চল।
আর থাকবো না পরাধীন, গর্জে ওঠো নিশিদিন,
বাংলার জাতি এক হও, অপশক্তি রুখে দাও।
স্বাধীন বাংলার স্বাধীন চিন্তা, স্বাধীন আমার দেশ,
স্বদেশ দেশে থাকবো সবাই, সোনার বাংলা গড়বো সবাই।
হিংসা-বিদ্বেষ কিছুই নাই, স্বদেশ প্রেমে এক আমরা সবাই,
আমার স্বদেশ বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি রে।
প্রকৃতির সৌন্দর্যে গড়া পাহাড়, পর্বত, নদী, নালা,
বাংলার মাটি — বাংলা-ই খাঁটি, বাংলা আমার ভাষা।
সুজলা-সুফলা, শস্যশ্যামলা, সবুজ গেড়া বেশ,
সৌরভে ভরা আমার প্রিয় সোনার বাংলাদেশ।
দেশের মানুষ দেশে রেখে, আমি হলাম দেশান্তরি,
অশ্রুসিক্ত নয়নজলে প্রবাসে দিলাম পাড়ি।
দেশের টানে বাড়ি ফিরি, পিতা-মাতার মধুর বাণী,
আমার স্বদেশ বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি রে।
ক্ষমতা চাই না — জনতা চাই
বুলেট চাই না — ব্যালট চাই
হুঙ্কার চাই না — সমঝোতা চাই
রক্তপাত চাই না — বাঁচতে চাই
পুলিশি লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস, কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান চাই না — পুলিশি নিরপেক্ষতা চাই
সাউন্ড গ্রেনেড চাই না — রহিত, নিরাপদ পরিবেশ চাই
রক্তপাত, গুম, হত্যা চাই না — শান্তিপূর্ণ ও সুব্যবস্থাপিত সম্পর্ক চাই
উত্তর: একটি ছোট্ট বাক্যাংশ যা সহজে মনে রাখা যায়, তাকেই শ্লোগান বলা হয়।
(নিচে মুসলিম দলগুলোর শ্লোগানের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো।)
শ্লোগান:
“ভারত ছাড়”, “বটম-আপ”, “কত্তম-ই মিল্লি”, “আমাদের ভূমি ছাড়, আমাদের পাকিস্তান।”
এসব ছিল পাকিস্তানের দাবি ও মুসলিম ঐক্যের প্রতীক — যা ছিল ব্রিটিশবিরোধী শ্লোগান।
সময়: ১৯০৭ সাল
দলপ্রধান: নবাব খাজা সলিমুল্লাহ সাহেব
শ্লোগান:
“বিশ্বাস, ঐক্য, শৃঙ্খলা”, “ইসলামের পথে চলো”, “মুসলিম ঐক্য এক হও।”
সময়: ১৯৪৭ সাল
দলপ্রধান: মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ সাহেব
শ্লোগান:
“ব্রিটিশ তাড়াও, মুসলমান বাঁচাও”,
“লাঙ্গল যার, জমি তার”,
“ঘাম যার, দাম তার”,
“কৃষকের মুক্তি, বাংলার মুক্তি।”
সময়: ১৯২৭ সাল
পরবর্তীতে দলীয় শ্লোগান ছিল —
“নাজিমুদ্দিনের গদি ছাড়”, “ফজলুল হক জিন্দাবাদ”, “যুক্তফ্রন্ট জিন্দাবাদ।”
সময়: ১৯৫৩ সাল
দলপ্রধান: শেরেবাংলা এ. কে. ফজলুল হক সাহেব
শ্লোগান:
“পাকিস্তান জিন্দাবাদ”,
“৪৭-এর লাহোর প্রস্তাব বাস্তবায়ন চাই।”
সময়: ১৯৪৮ সাল
দলপ্রধান: শহীদ সোহরাওয়ার্দী সাহেব
শ্লোগান:
“ইঁঃ ধষংড় ইবহমধষর”
অর্থ: “উর্দু নয়, বাংলা–ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।”
সময়: ১৯৫২–১৯৫৬ সাল
শ্লোগানসমূহ:
“স্বাধীন বাংলা জিন্দাবাদ”, “আজাদ বাংলা জিন্দাবাদ” (১৯৫৭ সাল)
“আমাদের সংগ্রাম চলবেই চলবে”, “পাকিস্তান জিন্দাবাদ” (১৯৬৯ সাল)
“ডাল খাবে না কি মানচিত্র খাবে”,
“স্বাধীনতা অর্জন করতে জানে, স্বাধীনতা রক্ষা করতে জানে না।” (১৯৭১ সাল)
দলপ্রধান: মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী সাহেব
শ্লোগান:
“বাংলাদেশ জিন্দাবাদ” (১৯৬৫ সাল)
“এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”,
“রক্ত দিয়েছি, আরও দেব — বাংলার মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশা’আল্লাহ।”
(১৯৭১ সালের ৭ মার্চ, রেসকোর্স ময়দান)
“জয় বাংলা”, “শহীদদের স্মৃতি অমর হোক”,
“শহীদদের বাংলাদেশ অমর হোক।”
(১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি, রেসকোর্স ময়দান)
“জয় বাংলা”
“জয় ভারত”
“বাংলাদেশ ভারতবর্ষ”
(১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি, কলকাতা)
“স্বাধীন বাংলার জাতির পিতা শেখ মুজিব, শেখ মুজিব”
“শেখ মুজিবের পথ ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো”
“বাঁশের লাঠি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো”
“মুজিববাদ মুজিববাদ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ”
“বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো”
“আমার দেশ তোমার দেশ — বাংলাদেশ, বাংলাদেশ”
“আমার নেতা তোমার নেতা — শেখ মুজিব, শেখ মুজিব”
“জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু”
(১৯৬৯–১৯৭১ সাল)
এই আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ নয়।
এটি ছিল শহীদ সোহরাওয়ার্দী সাহেবের প্রতিষ্ঠিত “আওয়ামী মুসলিম লীগ”।
পরবর্তীতে মওলানা ভাসানী সাহেব ১৯৪৮ সালে “মুসলিম” শব্দটি বাদ দিয়ে “আওয়ামী লীগ” নামটি গ্রহণ করেন।
অন্যদিকে, শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ” প্রতিষ্ঠা করেন।
“বন্দে মাতরম – বন্দনা করি মা”
“সত্যমেব জয়তে – সত্যেরই জয় হয়”
(১৯৭৫ সাল)
👉 উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব: *সৈয়দ ফারুক রহমান, মেজর ডালিম, কর্নেল রশিদ (ও তাঁদের সহযোদ্ধারা)।
“বাংলাদেশ জিন্দাবাদ” (১৯৭৮ সাল)
বেগম খালেদা জিয়ার শ্লোগানঃ
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ (১৯৯১ সাল)
খোদা হাফেজ (১৯৯১ সাল)
দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও (২০০৫ সাল)
দলীয় শ্লোগানঃ
জিয়ার দর্শনে এক হও
এক জিয়া লোকান্তরে, লক্ষ জিয়া ঘরে ঘরে
তারেক রহমান – খালেদা জিয়া
(বর্তমান শ্লোগানসমূহ)
১৯৭৫ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর খন্দকার মোশতাক আহমেদ “জয় বাংলা” শ্লোগানটি নিষিদ্ধ করেন এবং “ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ” জারি করেন।
এই খন্দকার মোশতাক আহমেদই প্রথম “বাংলাদেশ জিন্দাবাদ” শ্লোগান চালু করেন।
কিন্তু প্রশ্ন হলো —
জিয়াউর রহমান, যিনি ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, সেক্টর কমান্ডার, এমনকি বার্তা রেকর্ড অনুযায়ী স্বাধীনতার ঘোষক,
তিনি কেন মুক্তিযোদ্ধাদের নিজস্ব শ্লোগান ব্যবহার না করে খন্দকার মোশতাক আহমেদের চালু করা “বাংলাদেশ জিন্দাবাদ” শ্লোগান গ্রহণ করেছিলেন?
এছাড়া, বিএনপি’র গঠনতন্ত্রে শ্লোগান হিসেবে “শিক্ষা, ঐক্য, প্রগতি” উল্লেখ থাকলেও দলটি আজ পর্যন্ত সেই শ্লোগান ব্যবহার করে না — কেন?
অসমাপ্ত বিপ্লবের – অসমাপ্ত সংগ্রাম
শ্রেণী সংগ্রাম – সমাজ বদল
(১৯৭২ সাল)
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ (১৯৮১ সাল)
দলীয় শ্লোগানঃ
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, এরশাদ জিন্দাবাদ
৬৮ হাজার গ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে (১৯৮৫ সাল)
বিশ্বের শ্রমিকরা – এক হও
দুনিয়ার মজদুর – এক হও
(১৯৪৮ সাল)
মূলত চীনা মতবাদে অনুপ্রাণিত দল। বর্তমান আদর্শিক নেতৃত্ব — শি জিনপিং (চীনের নেতা)।
ইনকিলাব জিন্দাবাদ (২০২৫ সাল)
অর্থঃ বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।
এই শ্লোগানের মূল ভাব “ইয়ে আজাদি ঝুটা হ্যায়, লাখো ইসলাম ভূখা হ্যায়, স্বশস্ত্র সংগ্রাম গড়ে তুলো, এই সরকার হটাও।”
উর্দু কবি মুহাম্মদ ইকবাল ১৯০৭ সালে তাঁর সাহিত্যকর্মে প্রথম “ইনকিলাব জিন্দাবাদ” ব্যবহার করেন, যা পরে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিগুলো গ্রহণ করে।
আল্লাহর আইন চাই – সৎ লোকের শাসন চাই (১৯৯২ সাল)
দলীয় শ্লোগানঃ
নারায়ে তাকবির – আল্লাহু আকবার (১৯৪৩ সাল)
বিঃদ্রঃ সকল ইসলামী রাজনৈতিক দলের সাধারণ শ্লোগানঃ
“নারায়ে তাকবির – আল্লাহু আকবার।”
“পাকিস্তান জিন্দাবাদ”
মূলত প্রণয়ন করেন চৌধুরী রেহমত আলী (১৯৩৩ সাল)
তিনি তাঁর লেখায় ব্যবহার করেন —
“পাকিস্তান জিন্দাবাদ, পাকিস্তান আজাদী – পায়েন্দাবাদ।”
প্রথম উৎসঃ
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা, মাদারীপুরের স্কুল শিক্ষক পূর্বচন্দ্র দাস।
তাঁর আত্মত্যাগের স্মরণে কালিপদ রায় চৌধুরীর অনুরোধে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম “ভাঙ্গার গান” কাব্যগ্রন্থের “পূর্ণ অভিনন্দন” কবিতাটি লেখেন (১৯২২ সাল), যেখানে প্রথম “জয় বাংলা” শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
দ্বিতীয় উৎসঃ
একই কবিতার শেষে নজরুল লিখেছিলেন —
“বাঙালার জয় হোক, বাঙালির জয় হোক।” (১৯২২ সাল)
তৃতীয় উৎসঃ
নজরুল ইসলাম যখন নবযুগ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন, তখন তিনি ১৯৪২ সালে “বাঙালার জয় হোক, বাঙালির জয় হোক” কবিতাটি প্রকাশ করেন।
“জয়” শব্দের অর্থ দিয়েছেন — বিজয়, সাফল্য, ঐক্যের প্রতীক, সংগ্রামে অর্জন, কিংবা দখল।
১৯৪৩ সালে পাকিস্তানের সামরিক নেতা ইয়াহিয়া খান কবির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে “জয় বাংলা” শ্লোগানটি ব্যবহার করেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় ভারতের বিপ্লবী ভগত সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত বলেন — “ইনকিলাব জিন্দাবাদ” (১৯৪৭)।
অন্যদিকে মহাত্মা গান্ধী দেন “করো বা মরো (Do or Die)” এবং সুভাষ চন্দ্র বসু দেন “জয় হিন্দ” (১৯৪৭)।
চতুর্থ উৎসঃ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ছাত্র আফতাব আহমেদ ও চিশ্তী হেলালুর রহমান “জয় বাংলা” শ্লোগান দেন (১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৬৯)।
ছাত্রনেতা সিরাজুল ইসলাম খান ১৯৭০ সালের ১৯ জানুয়ারি পল্টন জনসভায় প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে এই শ্লোগান ব্যবহার করেন।
পঞ্চম উৎসঃ
পশ্চিমবঙ্গে “জয় বাংলা” শ্লোগান ব্যবহৃত হয় ১৯৪৭ সাল থেকেই, যা আজও চালু আছে।
ভারতের বিজেপি দল ব্যবহার করে “জয় শ্রীরাম”, আর সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস ব্যবহার করে “জয় বাংলা”।
ষষ্ঠ উৎসঃ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান “জয় বাংলা” শ্লোগান দেন ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ, রেসকোর্স ময়দানে।
মেজর জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের শেষে “জয় বাংলা” বলেন।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রও ৯ মাস ধরে যুদ্ধ চলাকালে “জয় বাংলা” সম্প্রচার করত মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণার জন্য।
কাজী নজরুল ইসলামের লেখা গান “জয় বাংলা, বাংলার জয়” দিয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা হয়েছিল।
এই “জয় বাংলা” আসলে ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের আধ্যাত্মিক শক্তি, যেমন মুসলিম জাতির জন্য “নারায়ে তাকবির – আল্লাহু আকবার।”
“জয় বাংলা” শ্লোগান আসলে আওয়ামী লীগের নয় — এটি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টি।
তাহলে কেন এই শ্লোগান ব্যবহারকারীদের অনেক সময় “আওয়ামী লীগের দোসর”, “ভারতের দালাল” বলে অপমান করা হয়?
কেন মুক্তিযোদ্ধা বা সাধারণ মানুষকে এই শ্লোগান ব্যবহার করায় নিন্দিত হতে হয়?
👉 জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন রইল।
কাজী নজরুল ইসলামের শ্লোগান পৃথিবীর যেকোনো মানুষ বা দল ব্যবহার করতে পারে — এতে বাধা কোথায়?
(শ্লোগানের ইতিহাসের পরিসংখ্যান সংগৃহীতঃ মোঃ আবু জাফর (বাবু-জী), স্বদেশ বাংলা)
জয় — বাংলা
বাংলার — জয়
জয় — বাংলা
স্বদেশ — বাংলার জয়
জয় বাংলা — স্বাধীন বাংলার জয়
জয় — বাংলা
স্বাভে․মত্বের — জয়
এপার বাংলা — ওপার বাংলা
স্বদেশ বাংলা — স্বদেশ বাংলা
পূর্ব বাংলা — পশ্চিম বাংলা
স্বদেশ বাংলা — স্বদেশ বাংলা
লাহোর প্রস্তাবের — বাস্তবায়ন চাই
গান্ধী, নেহেরু, প্যাটেল বল্লব ভাই,
ষড়যন্ত্রে দ্বিজাতি ভাগ করিলি — জবাব চাই।
ওড়িশা, বিহার, আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, করিমগঞ্জ —
স্বাধীন চাই, স্বদেশ বাংলা যুক্ত চাই।
জয় বাংলা — স্বদেশ বাংলা।
নাফ নদীতে — ব্রিজ চাই
রাখাইন রাজ্য — স্বদেশ চাই।
মুসলিম মুসলিম ভাই ভাই ভাই,
রাখাইন রাজ্য — স্বাধীন চাই।
রাখাইন রাজ্য — বাংলার ভূমি,
স্বদেশ বাংলা — মাতৃভূমি,
আমার ভূমির — অধিকার চাই।
রাখাইন রাজ্যে — শান্তি চাই,
আমার বাংলা — তোমার বাংলা,
রাখাইন রাজ্য — স্বদেশ বাংলা,
জয় বাংলা — স্বদেশ বাংলা।
বিঃ দ্রঃ
স্বদেশ বাংলা কোনো প্রাদেশিক রাজনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
স্বদেশ বাংলা হলো মুসলিম রাজনীতির ধারাবাহিকতা—
ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের আন্দোলন।
একতা — সততা — সমঝোতা — সহমর্মিতা — সহযোগিতা — সহনশীলতা — ন্যায়নীতি — আদর্শ — সূক্ষ্ম জ্ঞান।
🔹 একতা: সকলের ঐক্য ও পারস্পরিক বিশ্বাসের ভিত্তিতে দলকে শক্তিশালী করা।
🔹 সততা: নীতি ও নৈতিকতার পথে অবিচল থাকা।
🔹 সমঝোতা: মতভেদ নয়, বোঝাপড়ার মাধ্যমে সমাধান করা।
🔹 সহমর্মিতা: মানুষের কষ্ট ও অনুভূতির প্রতি আন্তরিক সহানুভূতি প্রকাশ।
🔹 সহযোগিতা: সমাজ ও দেশের উন্নয়নে পারস্পরিক সহায়তা।
🔹 সহনশীলতা: ভিন্ন মত ও সমালোচনার প্রতি ধৈর্য ও শ্রদ্ধাশীল মনোভাব।
🔹 ন্যয়নীতি: ন্যায় ও সুশাসনের ভিত্তিতে সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
🔹 আদর্শ: নৈতিক মূল্যবোধ ও ন্যায়ের পথে চলা।
🔹 সূক্ষ্ম জ্ঞান: জ্ঞান, বুদ্ধি ও বিচক্ষণতার সঠিক প্রয়োগ।
কাম, ক্রোধ, নেশা, মদ, মারামারি, রাগ, হিংসা, প্রতিহিংসা ও শত্রুতা পরিহার করা।
দলের আদর্শ হলো—
মানুষের চরিত্র গঠনে আত্মসংযম ও নৈতিকতার চর্চা করা।
অসৎ প্রবৃত্তি, হিংসা ও বিদ্বেষ ত্যাগ করে সমাজে শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও সহযোগিতার পরিবেশ গড়ে তোলা।
দলের বৈশিষ্টগুলো হলো —
কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা।
জ্ঞানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা ও জ্ঞানীদের পরামর্শ গ্রহণ ও পর্যালোচনা করা।
গুণী ব্যক্তিদের পথ অবলম্বন করা।
ছোটদের সদয়ভাবে দেখতে নেওয়া এবং বয়স্কদের সম্মান করা।
নিরিহ ব্যক্তিদের ওপর জুলুম, অত্যাচার বা নির্যাতন করা হবে না।
অসহায়দের সাহায্য করা।
ব্যক্তিগত মতকে জাতির ওপর চাপিয়ে না দিয়ে, জাতির কষ্ট, দুঃখ ও সমস্যাগুলো ধৈর্য্যসহকরে শ্রবণ করা।
দেশের নাগরিকদের শত্রু না ভেবে বন্ধুভাবে দেখা।
ধনী-গরিব, ছোট-বড়, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রতি ন্যায্য ও সহানুভূতিশীল মনোভাবে থাকা।
দেশ ও জাতির কল্যাণে সবসময় নিজের জীবন উৎসর্গের মানসিকতা রাখা।
দেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও ভূখণ্ড রক্ষা করতে নিজের জান-মাল উৎসর্গ করা।
অপশক্তি ও অত্যাচারী সিন্ধান্তকে রুখে দেওয়া।
ন্যায়নীতি এবং আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা।
প্রেরণামূলক বাক্য:
“আমরা শক্তি — আমরাই বল; সবাই মিলে সামনে চল।”
“দেশের জন্য হৃদয়কে শিমুলের মতো কোমল রাখো, শত্রুর প্রতি হৃদয়কে পাথরের মতো কঠোর করো।”
স্বদেশ বাংলা দলের দেশের পূর্ণগঠন পরিকল্পনা:
সংবিধান সরল ও সংক্ষিপ্ত করা:
সংবিধানকে সহজ ও ছোট করা হবে, যাতে নাগরিকরা সহজেই বোঝে।
১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সকল নাগরিকের জন্য সংবিধান সংগ্রহ বাধ্যতামূলক করা হবে।
ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে শুরু করে মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য রাষ্ট্রীয় সংবিধান নতুন বই আকারে লিপিবদ্ধ করা হবে।
অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য আলাদা নীতিমালা তৈরি করা হবে।
কেন সংবিধান সংক্ষিপ্ত করা হবে, তা দলের গাইডলাইনে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ রয়েছে।
সীমান্ত ও আকাশ প্রতিরক্ষা:
দেশের সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণ করা হবে।
আকাশ প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করা হবে।
লক্ষ্য হলো ইরানের মতো দেশীয় শক্তি সঞ্চয় করা, যা দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।
কিছু নিরাপত্তা বিষয় প্রকাশ্যে না রাখা হবে।
ফারাক্কা ও জল সংরক্ষণ:
ফারাক্কার সামনে বাধ নির্মাণ করা হবে।
বর্ষার মৌসুমে পানি আটকানো হবে।
শুকনো মৌসুমে নদীগুলোতে পানি সরবরাহ করা হবে।
এই পানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।
চাকরি, নাগরিক ভাতা ও অর্থিক সহায়তা:
৩৫ লাখ বেকার যুবককে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে।
৫ লাখ বিসিএস ক্যাডারকে চাকরি দেওয়া হবে।
১৮ বছর বয়সের নাগরিকদের ভাতা প্রদান করা হবে।
বাংলাদেশের প্রত্যেকটি পরিবারকে ১ লাখ টাকা দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ৫ বছর।
একই ব্যক্তি একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না।
জাতীয় নির্বাচনে ভোটে যে দল সবচেয়ে বেশি ভোট পাবে, সেই দল থেকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন।
প্রধানমন্ত্রী কার্যনির্বাহী ক্ষমতা সংসদীয় আসনের বিজয়ীদের, জাতীয় সংসদ এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে পরিচালনা করবেন।
রাষ্ট্রপতি
রাজনৈতিক দল থেকে রাষ্ট্রপতি হতে পারবে না।
রাষ্ট্রপতি জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন।
রাষ্ট্রপতির কার্যনির্বাহী ক্ষমতা অন্তর্ভুক্ত থাকবে: সেনা বাহিনী, নৌবাহিনী, বিডিআর বাহিনী, পুলিশ বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, এবং সমস্ত প্রশাসনিক ক্ষমতা।
নির্বাচন কমিশনার
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন।
নির্বাচন কমিশনারকে সার্চ কমিটি বা রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে নিয়োগ করা হবে না।
নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে, প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির কাছে নয়।
স্বদেশ বাংলার মতামত: দেশে এক রাষ্ট্রপ্রধান থাকা উচিত; অথবা প্রধানমন্ত্রীর ও রাষ্ট্রপতির মধ্যে কার্যনির্বাহী ক্ষমতা সমানভাবে ভাগ করতে হবে।
প্রধান বিরোধী দল
জাতীয় নির্বাচনে যে দল দ্বিতীয় স্থানে থাকবে, সেটিই প্রধান বিরোধী দল হবে।
প্রধান বিরোধী দলকে সংসদের ডেপুটি স্পিকারসহ ৫টি মন্ত্রণালয় প্রদান করা হবে।
তৃতীয় স্থানের দল
জাতীয় নির্বাচনে যে দল তৃতীয় স্থানে থাকবে, তাকে ৩টি মন্ত্রণালয় দেওয়া হবে।
দলীয় প্রতীক ও নির্বাচন ব্যবস্থা
স্থানীয় ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী ব্যক্তির ছবি ব্যালট পেপারে থাকবে।
শুধুমাত্র জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের প্রতীক ব্যবহৃত হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য ভবন
সকল রাজনৈতিক দলের জন্য একটি জাতীয় ভবন নির্মাণ করা হবে।
ভবনের মধ্যে রাজনৈতিক দলের প্রধান কার্যালয় থাকবে।
ভবনের সামনে সকল রাজনৈতিক দলের জন্য একটি সম্মিলিত রাজনৈতিক মঞ্চ থাকবে।
সংসদ সদস্য নির্বাচন
সংসদ সদস্য ব্যক্তিগত ইমেজের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন।
কোনো দলীয় প্রতীকে এমপি হতে পারবেন না।
এমপি এবং রাজনৈতিক দলের মধ্যে রাষ্ট্র পরিচালনার সম্পর্ক আলাদা থাকবে।
রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডের কারণে জনগণ বা রাষ্ট্রের সম্পদের ক্ষতি হলে, সংশ্লিষ্ট দল সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দেবে।
নির্বাচনের সময়সূচি
নির্বাচনের জন্য একটি সাধারণ বাজেট নির্ধারণ করা হবে।
তিন দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হবে:
প্রথম দিন: স্থানীয় নির্বাচন
দ্বিতীয় দিন: জাতীয় সংসদ নির্বাচন
তৃতীয় দিন: জাতীয় সরকার নির্বাচন
১. সরকারি চাকুরী থেকে বরখাস্তকৃত ব্যক্তিদের পুনর্বহাল
২০০৬ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত যেসব ব্যক্তি সরকারি চাকুরী থেকে বরখাস্ত হয়েছেন, তাদের প্রত্যেককে পুনরায় চাকুরীতে নিয়োগ দেওয়া হবে।
২. মিথ্যা মামলার প্রত্যাহার
১৯৭০ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে, সেই সকল মামলার প্রক্রিয়া অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হবে।
৩. আর্থিক ক্ষতিপূরণ
মিথ্যা মামলার কারণে যারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বা নিঃস্ব হয়েছেন, তাদের পূর্ণ ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।
১. বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়
বাংলাদেশের সকল সরকারী এবং বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোট ১০০ জন ছাত্র-ছাত্রী সংসদে আসন পাবেন।
২. কলেজ পর্যায়
বাংলাদেশের সকল সরকারী ও বেসরকারী কলেজ থেকে মোট ১০০ জন ছাত্র-ছাত্রী সংরক্ষিত আসনে প্যানেল হিসেবে থাকবেন।
১. আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উন্নীত করা হবে।
২. বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরকারী করা
বাংলাদেশের সকল বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করা হবে।
৩. জেলা পর্যায়ের বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।
৪. সরকারি বিদ্যালয়
বাংলাদেশের সকল হাইস্কুল সরকারী করা হবে।
বাংলাদেশের সকল কিন্ডারগার্টেন স্কুল সরকারী করা হবে।
৫. ছাত্রাবাস সুবিধা
বাংলাদেশের সকল কলেজ এবং স্কুলের জন্য পর্যাপ্ত ছাত্রাবাস তৈরি করা হবে।
৬. মাদ্রাসা শিক্ষা
বাংলাদেশের সকল বেসরকারী মাদ্রাসা সরকারী করা হবে।
৭. নির্মূল করা হবে শিক্ষার খরচ
প্রাইমারি স্কুল থেকে ডিগ্রি পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি ফি, বেতন এবং পরীক্ষা ফি সম্পূর্ণ ফ্রি করা হবে।
১. রেল যোগাযোগ
ঢাকা রাজধানী থেকে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা পর্যন্ত ডাবল রেল লাইন নির্মাণ করা হবে, ফুটপাতসহ।
২. রোড যোগাযোগ
ঢাকা থেকে দেশের প্রতিটি বিভাগ পর্যন্ত ৮-লেনের কারপেটিং রাস্তাসহ ফুটপাত নির্মাণ করা হবে।
প্রতিটি বিভাগ থেকে সকল জেলা পর্যন্ত ৬-লেনের কারপেটিং রাস্তাসহ ফুটপাত নির্মাণ করা হবে।
প্রতিটি বিভাগ থেকে সকল উপজেলা পর্যন্ত ৪-লেনের কারপেটিং রাস্তাসহ ফুটপাত নির্মাণ করা হবে।
প্রতিটি উপজেলা থেকে সকল গ্রাম পর্যন্ত ২-লেনের কারপেটিং রাস্তাসহ ফুটপাত নির্মাণ করা হবে।
৩. নিরাপদ সড়ক
দেশের সকল সড়ক আন্তর্জাতিক নিরাপদ মান অনুসারে নির্মাণ করা হবে।
৪. ফ্রি বাস সুবিধা
গরিব, অসহায়, প্রতিবন্ধী, এতিম এবং অন্যান্যদের জন্য ঢাকা থেকে প্রতিটি জেলায় যাওয়ার জন্য ২টি করে ফ্রি বাস সার্ভিস চালু করা হবে।
মোট ফ্রি বাস সংখ্যা: ৬৪ জেলা × ২ = ১২৮টি।
১. ফ্রি চিকিৎসা সুবিধা
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় ৫ লাখ মানুষকে বিশেষ কার্ড প্রদান করা হবে।
এই কার্ডধারীরা আজীবন ফ্রি চিকিৎসা সুবিধা পাবেন।
৬৪ জেলার জন্য মোট ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ আজীবন ফ্রি চিকিৎসা পাবেন।
২. হাসপাতাল নির্মাণ
প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ২০০ বেডের আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে।
৩. ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা
প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের জন্য একটি ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স থাকবে।
শহর ভিত্তিক প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে অ্যাম্বুলেন্স থাকবে।
৪. হেলিকপ্টার মেডিকেল সার্ভিস
প্রতিটি জেলায় একটি হেলিকপ্টার দেওয়া হবে।
দ্রুততম জরুরি চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহৃত হবে।
ফ্রি সার্ভিসের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে গরিব, অসহায়, দরিদ্র, এতিম, গৃহহীন ও স্বল্প আয়ের মানুষদের।
১. আর্থিক সহায়তা
প্রতিটি পরিবারকে ১ লক্ষ টাকা প্রদান করা হবে।
সরকারী চাকুরীজীবি, প্রবাসী এবং ব্যবসায়ী পরিবার এই অর্থ পাবেন না।
গরীব, অসহায়, বেকার যুবক, প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, নদী ভাঙ্গন-প্রভাবিত, গৃহহীন ও অন্যান্য পরিবারের জন্য সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা বিনা সুদে ঋণ দেওয়া হবে।
২. চাকুরি ও ক্যাডার নিয়োগ
৬৪ জেলা থেকে প্রতিজেলায় ৫০ হাজার মানুষকে সরকারী চাকুরীতে নেওয়া হবে।
(মোট: ৩৪,৫০,০০০ জন + প্রতিবন্ধী ৫০ হাজার = ৩৫ লক্ষ)
৬ লক্ষ বিসিএস ক্যাডার নিয়োগ করা হবে।
৩. গ্রাম উন্নয়ন ও নিরাপত্তা
প্রতিটি গ্রামে একটি করে থানা নির্মাণ করা হবে।
প্রতিটি গ্রামকে উপ-শহরে রূপান্তর করা হবে, যেখানে থাকবে:
একটি জাতীয় মসজিদ
একটি জাতীয় ঈদগাহ
একটি খেলাধূলার মাঠ
একটি সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান কেন্দ্র
৪. প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থা
প্রতিটি বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদে মন্ত্রণালয়ের একটি অফিস নির্মাণ করা হবে।
প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে একটি আদালত এবং একটি জেলখানা স্থাপন করা হবে।
৫. শিল্প ও কর্মসংস্থান
প্রতিটি জেলায় মিল ও বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি স্থাপন করা হবে।
বাংলাদেশের কোম্পানির মিল ও কল জেলায় স্থানান্তর করা হবে।
শহরের জনবলের চাপ কমানো এবং বেকারত্ব দূর করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে।
৬. কৃষি সহায়তা
কৃষকদের সার, বীজ, ঔষধ ও কিটনাশক বাজার মূল্যের অর্ধেক দামে দেওয়া হবে।
প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে কৃষকদের জন্য একটি গুদামঘর নির্মাণ করা হবে।
৭. বাসস্থান
৫ কোটি পরিবারের জন্য পাকা ঘর নির্মাণ করা হবে।
সকল নিম্ন-আয়ের পরিবারকে বসবাসযোগ্য করে তোলা হবে।
সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪০ বছর নির্ধারণ করা হবে।
চাকরির মেয়াদ থাকবে ২৫ বছর, এবং পদমর্যাদা থাকবে অষ্টম গ্রেড পর্যন্ত।
সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ করা হবে ৫০,০০০ টাকা।
(ক) বর্তমানে বিভাগ রয়েছে ০৮টি, আমরা তা বাড়িয়ে ১৮টি করব।
(খ) জেলা রয়েছে ৬৪টি, আমরা তা বাড়িয়ে ৭৫টি করব।
(গ) উপজেলা রয়েছে ৪৯৫টি, আমরা তা বাড়িয়ে ৫৫০টি করব।
(ঘ) ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে ৪,৫৭৮টি, আমরা তা বাড়িয়ে ৫,৫২৫টি করব।
(ঙ) গ্রাম রয়েছে ৮৭,১৯১টি, আমরা তা বাড়িয়ে ৯৫,০০০টি করব।
(চ) থানা রয়েছে ৬০৯টি, আমরা তা বাড়িয়ে ৯৫০টি করব।
(ছ) সিটি কর্পোরেশন রয়েছে ১২টি, আমরা তা বাড়িয়ে ৪০টি করব।
(ঝ) পৌরসভা রয়েছে ৩২৮টি, আমরা তা বাড়িয়ে ৫০০টি করব।
স্বদেশ বাংলা পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে—
জাতীয় সম্পদ বৃদ্ধি পাবে, বেকারত্ব হ্রাস পাবে, ব্যবসা-বাণিজ্য ও কুটির শিল্পের বিকাশ ঘটবে।
আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি হবে, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, খুন-ধর্ষণ, ছিনতাই, ঘুষসহ সকল অসামাজিক কার্যক্রম চিরতরে বন্ধ হবে।
সরকারি চাকরিজীবীদের সততা, যোগ্যতা, সাহসিকতা, ধৈর্য, দক্ষতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি দেওয়া হবে।
কোনো প্রকার দলীয়করণ, আত্মীয়করণ বা স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে পদোন্নতি দেওয়া হবে না।
সরকারি প্রতিষ্ঠানে আমলাতান্ত্রিক নিয়োগ ব্যবস্থা চালু থাকবে না।
যে কর্মকর্তা প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র, তিনিই সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রশাসনের ভেতরে বিদ্যমান অনিয়ম আমরা জানি—
তবে এই নীতির মাধ্যমে সব অনিয়ম নিরসন করা হবে।
প্রবাসীদের জন্য বিমানবন্দরে লাল গালিচা সংবর্ধনা গেট স্থাপন করা হবে।
তারা আমাদের দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধা, তাই তাদের লাগেজ বা মালামাল চুরি বা নষ্ট হলে বাংলাদেশ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণসহ জরিমানা প্রদান করবে।
সকল প্রবাসীর জন্য সরাসরি যোগাযোগের সুবিধা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে হটলাইন চালু করা হবে।
যে সব দেশে বাংলাদেশের নাগরিকরা বসবাস করেন, সেইসব দেশে দূতাবাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে এবং প্রতিটি দূতাবাসে ২৪ ঘণ্টা যোগাযোগের জন্য হটলাইন সেবা চালু থাকবে।
সাংবাদিকদের জন্য একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে।
যেমন —
শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষকদের হাতে থাকবে,
যুব মন্ত্রণালয় যুবকদের হাতে থাকবে,
শ্রম মন্ত্রণালয় শ্রমিকদের হাতে থাকবে।
তেমনি, সৎ, সাহসী ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রত্যেক সাংবাদিকের সঙ্গে একজন এ.এস.আই. ও একজন কনস্টেবল নিয়োজিত থাকবে।
এছাড়া, বিনা অনুমতিতে বাংলাদেশের যেকোনো ব্যক্তি, সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সংবাদ সংগ্রহের পূর্ণ অনুমতি সাংবাদিকদের দেওয়া হবে — যাতে তারা স্বাধীনভাবে সত্য উদঘাটন ও জনস্বার্থে সংবাদ প্রচার করতে পারেন।
বিদ্যুৎ খাতকে সম্পূর্ণভাবে সরকারি করা হবে।
বর্তমানের বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো বাতিল করা হবে।
মিটার চার্জ সম্পূর্ণ ফ্রি করা হবে এবং ন্যায্য মিটার বিল চালু করা হবে।
বাসাবাড়ি, অফিস-আদালত, মিল-কারখানা, হোটেল, গ্যারেজ বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে গৃহকর্মী বা কর্মচারী নিয়োগের আগে প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে।
নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তির সম্পূর্ণ বায়োডাটা প্রশাসনের কাছে জমা দিতে হবে।
কারণ—নিয়োগপ্রাপ্তদের ওপর নির্যাতন, মারধর, খুন বা লাশ গোপন করার মতো নৃশংস ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর সহ্য করা হবে না।
অতএব, কোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়ার আগে প্রশাসনের অনুমোদন বাধ্যতামূলক।
প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হবে বাংলাদেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি আইনজীবীর গোপন ভোটের মাধ্যমে।
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বা সরকারদলীয় কোনো ব্যক্তিকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
আদালত প্রাঙ্গণে বা কোনো মামলার রায় প্রদানে রাজনৈতিক প্রভাব বা সংশ্লিষ্টতা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।
প্রত্যেক বিচারককে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয়ভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
(ক) প্রত্যেক জেলায় ইতিহাস গ্রন্থাগার স্থাপন করা হবে।
(খ) প্রত্যেক জেলায় বিজ্ঞান গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করা হবে — যেখানে যে কেউ, যে কোনো বয়সে, রাষ্ট্রীয় খরচে বিনামূল্যে গবেষণা করতে পারবেন।
আমাদের লক্ষ্য থাকবে আমেরিকার নাসা বিজ্ঞানীদের মতো উন্নত গবেষণার পরিবেশ তৈরি করা।
(গ) সাদা মনের মানুষ বা সুশীল সমাজের একটি তালিকা তৈরি করা হবে এবং তাদের আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হবে।
রাষ্ট্রে কোনো আপৎকালীন পরিস্থিতিতে এদের মধ্য থেকে যোগ্য ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব দেওয়া হবে।
(ঘ) কোনো ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি ছাড়া গ্রেফতার করা যাবে না।
গ্রেফতারের আগে লিখিত অভিযোগপত্র তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে হবে, তারপরই গ্রেফতার প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে।
(ঙ) বাংলাদেশ ডাক বিভাগ সম্পূর্ণভাবে সরকারি খাতে ফিরিয়ে আনা হবে।
(চ) কোনো অপরাধী জেল বা সাজা পেলে, সে যতদিন কারাগারে থাকবে, তার সমস্ত খরচ তার পরিবারকে বহন করতে হবে।
রাষ্ট্র অপরাধীর খাওয়া, চিকিৎসা বা পোশাকের জন্য জনগণের টাকায় ব্যয় করবে না।
(ছ) সকল অপরাধের বিচার সর্বনিম্ন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর করা হবে।
যত বড় মামলা হোক না কেন, সর্বোচ্চ ২৯ দিনের মধ্যে রায় কার্যকর করতে হবে।
(জ) বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের শাখা স্থাপন করা হবে।
মূল সেন্ট্রাল সুপ্রিম কোর্ট থাকবে ঢাকায়।
(ঝ) পুলিশ প্রশাসনে “জোন সিস্টেম” চালু করা হবে।
(ঞ) রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ঢাকা থেকে স্থানান্তর করা হবে, যাতে রাজধানীর যানজট ও নিরাপত্তা চাপ কমে।
(ট) জুলাই মাসে শহীদ ও আহতদের স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশে একটি বিশেষ শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
সব আহত ও নিহত শহীদ পরিবারের পূর্ণ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
১৯৭০ সাল থেকে বিচার কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা হবে।
১৯৭০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যত বিচারাধীন মামলা রয়েছে, তা ২ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ নিষ্পত্তি করতে হবে।
আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলো মাত্র ৫ বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
তবে বাংলাদেশের সম্পূর্ণ সীমান্ত এলাকায় একটি সুরক্ষা প্রাচীর নির্মাণ করতে ১৫ বছর সময় লাগবে।
এছাড়া, ফারাক্কা বাঁধের বিপরীতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটি নতুন “বাংলাদেশ ফারাক্কা বাঁধ” নির্মাণ করা হবে, যা ১০ বছরের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে — ইনশাআল্লাহ।
আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে আরও বহু বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে,
যেগুলো বিস্তারিতভাবে আমাদের গাইডলাইন বইতে উল্লেখ করা হয়েছে।
কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এসে নিজেদের ইচ্ছামতো বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করতে পারবে না।
এ উদ্দেশ্যে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হবে,
যে কমিটি চুক্তির লাভ-ক্ষতি, আয়-ব্যয় এবং সকল দিক বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবে।
যদি কমিটি ইতিবাচক প্রতিবেদন দেয়, তবে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।
আর যদি নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রদান করে, তবে সেই চুক্তি বাতিল বলে গণ্য হবে।
এছাড়া, বিগত দিনের জনপ্রতিনিধিরা পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না —
এটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়।
তবে তারা জনপ্রতিনিধি থাকাকালীন সময়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে যে অর্থ বরাদ্দ পেয়েছেন,
সেই অর্থ কোন কোন খাতে ব্যয় হয়েছে তা পরবর্তী জনপ্রতিনিধির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে।
কেউ দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে দেশত্যাগ, আত্মগোপন, লুকিয়ে থাকা বা মোবাইল ফোন বন্ধ রাখা যাবে না।
যেভাবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় শপথ নেওয়া হয়েছিল,
ঠিক তেমনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করাও বাধ্যতামূলক।
এই নিয়ম রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী—সবাইয়ের জন্য প্রযোজ্য।
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসা কোনো সরকার ইচ্ছামতো সংবিধান সংস্কার করতে পারবে না।
সংবিধান সংস্কারের জন্য জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিবর্গ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সকল রাজনৈতিক দল ও আইন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি বিশেষ “সংস্কার কমিটি” গঠন করা হবে।
এই কমিটি যদি মনে করে যে সংবিধান সংস্কার প্রয়োজন, তাহলেই তা করা যাবে।
তারা যদি মনে না করে, তাহলে কোনো সরকার এককভাবে সংবিধান পরিবর্তন করতে পারবে না।
নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে ৬ মাস আগে।
প্রথম ৩ মাস থাকবে যাচাই-বাছাইয়ের সময়,
পরবর্তী ২ মাস নির্বাচনী প্রচারণা,
এবং সর্বশেষ ১ মাস দায়িত্ব হস্তান্তর প্রক্রিয়ার জন্য নির্ধারিত থাকবে।
যারা সংসদ সদস্য নির্বাচনে অংশ নেবে,
তাদের প্রত্যেককে নির্বাচন কমিশনের কাছে হলফনামা জমা দিতে হবে।
প্রত্যেক প্রার্থীর হলফনামার তথ্য মাঠপর্যায়ে তদন্ত করা হবে।
যাদের তথ্য সঠিক প্রমাণিত হবে, কেবল তারাই নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি পাবে।
যারা মিথ্যা তথ্য বা ভুয়া হলফনামা দেবে, তাদের ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হবে।
সাবেক এমপি তার দায়িত্বকালে রাষ্ট্রীয়ভাবে যে বাজেট পেয়েছেন এবং কোথায় কীভাবে খরচ করেছেন,
তার সম্পূর্ণ হিসাব নতুন এমপির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করতে হবে।
যদি সাবেক এমপি এই হিসাব সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিতে ব্যর্থ হন,
তাহলে নতুন এমপি তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করতে পারবেন।
এই একই নিয়ম মন্ত্রী, স্পিকার, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
সকল দায়িত্ব হস্তান্তর ও হিসাব যাচাই সম্পন্ন হওয়ার পরেই নতুন সরকার শপথ গ্রহণ করবে।
যাদের মধ্যে অনিয়ম পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন মামলা দায়ের করবে এবং
তাদের সাজা হবে ২০ বছর।
অন্যদিকে, যারা সঠিকভাবে হিসাব প্রদান করবে ও দায়িত্ব হস্তান্তর সম্পন্ন করবে,
তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হবে।
ক. দুস্থ, অসহায়, গরিব, এতিম, প্রতিবন্ধী, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, পঙ্গু, গৃহহীন, ভূমিহীন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত, গরিব ছাত্র-ছাত্রী ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীকে দলীয় অর্থায়নে পুনর্বাসন করা হবে। তাদের জন্য বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসা, কুটির শিল্প ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
খ. বৃদ্ধ, অসহায়, গরিব, অসুস্থ, কঠিন রোগে আক্রান্ত, দুর্ঘটনায় পঙ্গু, বিধবা নারী ও বয়স্ক নারীদের আর্থিকভাবে পুনর্বাসন করা হবে।
গ. সকল গরিব ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিটি শ্রেণির বই বিনামূল্যে প্রদান করা হবে।
ঘ. প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিটি বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলাদা স্কুল স্থাপন করা হবে। এসব স্কুলে গরিব, অসহায়, এতিম ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে পড়াশোনা করতে পারবে।
ঙ. তাদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মশালা স্থাপন করা হবে, যাতে তারা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে। প্রয়োজনে বিদেশে ফ্রি চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হবে।
চ. প্রতিটি বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে শরীরচর্চা, বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা, গান, কবিতা, আবৃত্তি ইত্যাদির জন্য একাডেমি গঠন করা হবে।
ছ. নিরক্ষর ব্যক্তিদের জন্য সারাদেশে অক্ষরদান স্কুল স্থাপন করা হবে।
জ. ভূমিকম্প, বন্যা, ভূমিধস ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রশিক্ষণ একাডেমি খোলা হবে। এসব দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষণিকভাবে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ঔষধ, চিকিৎসা ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। শীতকালে শীতবস্ত্রও বিতরণ করা হবে।
ঝ. মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী ও গরিব শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে—একদম বিনামূল্যে।
ঞ. অনূর্ধ্ব ১৯ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সারাদেশে ফুটবল টুর্নামেন্ট চালু করা হবে, যেন তারা জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পায়।
ট. অনূর্ধ্ব ১৯ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সারাদেশে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চালু করা হবে।
ঠ. যুব সমাজের জন্য সারাদেশে ফুটবল ও ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হবে।
ড. মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, উপজাতীয়, জেলে, তাঁতি, কুমারসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য তাঁত ও কুটির শিল্প এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
ঢ. জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে শিশুদের বিনোদনের জন্য সারাদেশে শিশু পার্ক স্থাপন করা হবে।
ণ. সকল শ্রেণি ও বয়সের মানুষের প্রতিভা বিকাশের জন্য “মিডিয়া সেল” চালু করা হবে। এজন্য ২১শে বইমেলা ও বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা হবে।
ত. আমরা বাঙালি জাতি। বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সারাদেশে পুনরায় চালু করা হবে।
এগুলোর মধ্যে থাকবে—পল্লীগীতি, মুর্শিদী, ভাওয়াইয়া, জারি, লালনগীতি, নজরুলগীতি, রবীন্দ্রসংগীত, আঞ্চলিক গান, নৌকা বাইচ, ঘোড়দৌড়, পুতুলনাচ, খেলাধুলা, ধর্মীয় গজল, ওয়াজ ও ওরশ মাহফিলসহ বাঙালির সকল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।
থ. মনে রাখতে হবে—মৌলবাদী ফতোয়া ও বাঙালির ঐতিহ্য এক নয়।
মৌলবাদীরা ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে নিজেদের স্বার্থে বিভক্ত দল গঠন করছে। এর ফলে সমাজে বিভাজন ও মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটছে। তাই মৌলবাদীদের অপসংস্কৃতি রোধ করে বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি পুনরায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
দ. দলের নেতা-কর্মীদের জন্য প্রতিটি বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে একটি করে ব্যাংক খোলা হবে। এখান থেকে বিনা সুদে ঋণ দেওয়া হবে। গরিব ও অসহায়েরাও এই সুবিধার আওতায় আসবে।
ধ. প্রতিটি বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্থাপন করা হবে।
দলের নেতা, কর্মী, সদস্য ও সমর্থকরা আজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন।
দলীয় কার্যক্রমে আহত বা মৃত হলে তাদের বা তাদের পরিবারের পূর্ণ আর্থিক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
ণ. প্রতিটি বিভাগে একটি করে বুয়েট মানের প্রকৌশল স্কুল ও কলেজ স্থাপন করা হবে, যেখানে দলীয় নেতা-কর্মীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
ত. প্রতিটি বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় কারিগরি স্কুল ও কলেজ স্থাপন করা হবে, এখানেও দলীয় নেতা-কর্মীদের অগ্রাধিকার থাকবে।
থ. আমরা বাঙালি জাতি—“মাছে ভাতে বাঙালি।”
মৌলবাদীদের ফতোয়ার কারণে আমাদের সংস্কৃতি ধ্বংস হতে দেওয়া যাবে না। তাই বাঙালির ঐতিহ্যবাহী গান, খেলা, বাদ্যযন্ত্র ও সংস্কৃতি পুনরায় চালু করা হবে।
দ. দলের নিজস্ব মিডিয়া সেল চালু করা হবে—যেমন জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশন চ্যানেল, প্রেস ইত্যাদি।
ধ. বাৎসরিক প্রতিবেদন সংস্থা গঠন করা হবে। এটি সারা বাংলাদেশে এক বছরে—
কতজন শিশু জন্মগ্রহণ করেছে, কতজন মৃত্যু বরণ করেছে, কোন কোন কারণে মৃত্যু ঘটেছে (রোগ, দুর্ঘটনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অপরাধ ইত্যাদি), এসব তথ্য বিস্তারিতভাবে প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করবে।
এছাড়া সরকারের সাফল্য, ব্যর্থতা, আয়-ব্যয়, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ইত্যাদি বিষয়েও প্রতিবেদন দিতে হবে।
রাষ্ট্রের যেমন নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা আছে, তেমনি দলেরও একটি গোয়েন্দা সংস্থা থাকবে।
রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ তদন্ত সংস্থা যেমন পিবিআই, ঠিক তেমনি দলেরও একটি তদন্ত টিম গঠন করা হবে।
বিগত সরকারগুলোর সময় দেখা গেছে—বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা প্রচারণা চালানো হতো।
তাই দলের অভ্যন্তরীণ তদন্ত টিমের কাজ হবে দলের ভেতরে কোনো ধরনের
দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি বা ঘরবাড়ি দখল, ষড়যন্ত্র, মারামারি, খুনাখুনি,
জনগণের প্রতি অন্যায়-অত্যাচার, কিংবা অনিয়মের ঘটনা তদন্ত করা।
এই টিম দলের নেতাকর্মীদের জনপ্রিয়তা, রাষ্ট্রের অনিয়ম,
এবং দেশের যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সত্যতা যাচাই করে তা
জনসমক্ষে প্রকাশ করবে। প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক ও বার্ষিক প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হবে।
দলের পক্ষ থেকে একটি রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ একাডেমি গঠন করা হবে,
যেখানে নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে—
দেশের সংবিধান, ভূখণ্ড, মানচিত্র ও সীমান্ত রক্ষার পদ্ধতি
জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের উপায়
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতিমুক্ত রাখার কৌশল
অভিজ্ঞ ও আদর্শ নেতৃত্ব গড়ে তোলার শিক্ষা
বক্তৃতা দেওয়া ও জনসমক্ষে কথা বলার দক্ষতা
সাধারণ মানুষ, প্রশাসন, রাষ্ট্রপ্রধান, কূটনীতিক, সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগের নিয়ম
ষড়যন্ত্র মোকাবেলার উপায় ও আত্মরক্ষার কৌশল
মিডিয়ায় কথা বলার আচরণবিধি
মিছিল, মিটিং, সমাবেশ ও প্রতিবাদ আয়োজনের নিয়ম
সভাপতির নির্বাচন ও অতিথি বক্তব্য দেওয়ার ধরণ
দলের ভাবমূর্তি রক্ষা ও জনসমর্থন বাড়ানোর কৌশল
নির্বাচন পরিচালনা ও সাংগঠনিক দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ
দলের কনিষ্ঠ সদস্যরা কখনই পিতা-মাতার সঙ্গে বেয়াদবি করতে পারবে না। পিতা-মাতার যুক্তিসঙ্গত আদেশ অমান্য করা যাবে না।
বড়দের প্রতি সম্মান বজায় রাখতে হবে, বিদ্যালয় বা কলেজে কোনো মারামারি করা যাবে না, শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ করা যাবে না।
কোনো কিশোর সংঘের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া যাবে না এবং নেশাগ্রস্ত হওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এক কথায়, সমাজবিরোধী বা অনৈতিক কোনো কাজে জড়ানো যাবে না।
এ ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে, সাত দিনের মধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
নিজ গ্রামের বা শহরভিত্তিক ওয়ার্ড সভাপতি কিংবা ইউনিয়ন সভাপতি ব্যক্তিগতভাবে এই বহিষ্কার কার্যকর করতে পারবেন।
যদি কোনো সদস্যকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়, তবে প্রমাণ ও সাক্ষ্যসহ থানা কমিটির কাছে আপিল করা যাবে বহিষ্কার প্রত্যাহারের জন্য।
দলের কর্মীদের ক্ষেত্রেও একই বহিষ্কারের নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
গ্রাম, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা, জেলা, বিভাগ, সিটি করপোরেশন বা মহানগর—
সব স্তরের নেতারা কোনো অবস্থাতেই
চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, তদবির বাণিজ্য, ঘুষ বাণিজ্য বা অন্য কোনো অনৈতিক কাজে জড়াতে পারবেন না।
কোনো নেতার আত্মীয়স্বজন বা ঘনিষ্ঠজন যদি অন্যায় বা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়ায়, তাহলে তাদের পক্ষ নেওয়া বা সেল্টার দেওয়া যাবে না।
কোনো নেতাই নিজের পছন্দের কাউকে পদ দিতে পারবেন না।
কিশোর গ্যাং গঠন করা, নারী কেলেঙ্কারিতে জড়ানো, বা দলের কর্মীদের অনৈতিক কাজে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এই নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হলে, ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
দলের অনুমতি ছাড়া কোনো নেতা
অন্য দলের নেতা, সরকারি কর্মকর্তা, বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা, রাষ্ট্রদূত, এনজিও, প্রশাসন, বিচারক বা অন্য কারও সঙ্গে গোপন বৈঠক করতে পারবেন না।
দলের অন্য নেতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এ ধরনের অনৈতিক কাজের প্রমাণ পাওয়া গেলে, ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে বহিষ্কার করা হবে।
দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হলে মানহানির মামলাও করা হবে।
দলের কোনো নেতা বা কর্মী সমাবেশ, মিছিল, মানববন্ধন বা অন্য কোনো কার্যক্রমে
কাউকে উচ্চস্বরে, কর্কশ ভাষায় বা রাগান্বিতভাবে ধমক দিয়ে কথা বলতে পারবেন না।
এমন প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত বা বহিষ্কার করা হবে।
দলের কোনো সদস্য সভা, মিছিল, বা সমাবেশে সামনের সারিতে যাওয়ার জন্য ধাক্কাধাক্কি করতে পারবে না।
সভাপতির বা অন্য গুরুত্বপূর্ণ পদের আসন না পাওয়ায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যাবে না।
এ ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে, তিন কার্যদিবসের মধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
মনে রাখতে হবে—সামনের সারিতে বসলে বা মিডিয়ায় দেখা গেলেই নেতা হওয়া যায় না;
নেতা হতে হলে জনগণের আস্থা ও সমর্থন অর্জন করতে হবে এবং দলের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে।
কোনো নেতা বক্তৃতা দেওয়ার সময় তার পিছনে বা ডান-বামে কেবল সেই নেতা বা তার জুনিয়র সহকর্মীরা দাঁড়াতে পারবেন,
যাদের পরবর্তী বক্তৃতা দেওয়ার দায়িত্ব আছে।
অন্য কেউ দাঁড়ালে তার সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হবে।
যে সদস্য নেতা হিসেবে দায়িত্ব নেবেন, তাকে নিজের পূর্ণ বায়োডাটা ও
সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিবরণ দলকে জানাতে হবে।
দল তার সম্পদ ও আয়ের উৎস পর্যবেক্ষণ করবে।
দলের প্রভাব ব্যবহার করে সম্পদ বা আয় অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেলে,
দল থেকে বহিষ্কার করা হবে এবং দুর্নীতির অভিযোগে আদালতে মামলা করা হবে।
দোষ প্রমাণিত হলে সর্বনিম্ন পাঁচ বছরের সাজা নিশ্চিত করতে দল আদালতে ব্যবস্থা নেবে।
বাকি নির্দেশনা দলের গাইডলাইনে বিস্তারিতভাবে দেওয়া আছে।
নিচের নিয়মগুলো দলের চাঁদা সংগ্রহ ও জমা সংক্রান্ত অনবদ্য নির্দেশিকা — ভাষা, বক্তব্য সবই তোমার মতোই রাখা হয়েছে; আমি কেবল পরিষ্কার ও বোধগম্য করে সাজিয়েছি।
দলের একটি কেন্দ্রীয় ফান্ডের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকবে। সব চাঁদা অবশ্যই ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে জমা দিতে হবে — কারো হাতে নগদভাবে চাঁদা হস্তান্তর করা যাবে না।
চাঁদা জমা করার পরে যে জমা রসিদ প্রদান করা হবে, তা দলের প্রধান কার্যালয়ে দাখিল করতে হবে।
একটি শাখা কমিটিতে মোট সদস্য সংখ্যা ধরা হয়েছে ৮৭ জন।
ঐ ৮৭ জনের সম্মিলিত মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করলে মোট পরিমাণ হবে ৮,৫৫০ টাকা (উদাহরণ হিসেবে দেওয়া)।
সংগ্রহকৃত টাকা দুই থেকে পাঁচ জন নেতা মিলিয়ে স্বাক্ষরিত জমা রসিদসহ মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে দলের প্রধান কার্যালয়ে জমা দিতে হবে। (প্রতিটি কমিটি একই নিয়ম অনুসরণ করবে)
চাঁদার হার বাড়ানো বা কমানো হতে পারে; তবে আর্থিক দুর্বলতা প্রমাণ করলে সেই সদস্যের জন্য চাঁদা মওকুফ করা যেতে পারে।
আর্থিকভাবে সক্ষম সদস্যরা অসচ্ছল ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে তাদের চাঁদা প্রদান করে সহযোগিতা করতে পারবেন।
যে কোনো সদস্য চাঁদা দিতে অক্ষম হলে দলের সংশ্লিষ্ট কমিটির নেতার কাছে লিখিত আবেদন করতে হবে; কমিটি আবেদনটি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।
কোনো সদস্য একটানা এক বছর চাঁদা প্রদান না করলে তার সদস্যপদ স্থগিত করা হবে।
একটানা তিন বছর চাঁদা না দিলে সদস্যটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সদস্যপদ ও কমিটি থেকে বহিষ্কার হয়ে যাবে।
কেউ চাইলে এককালীন ১–৫ বছর পর্যন্ত অগ্রিম চাঁদা প্রদান করতে পারবেন।
বিশেষ নিয়ম: যদি কেউ একবারে ১২ বছরের চাঁদা প্রদান করে, তাহলে তাকে আজীবন চাঁদা মওকুফ করা হবে এবং তিনি আজীবন সদস্যপদ পাবেন।
নিচের নিয়মগুলো দলের চাঁদা সংগ্রহ ও জমা সংক্রান্ত নির্দেশিকা হিসেবে কার্যকর থাকবে।
দলের একটি কেন্দ্রীয় ফান্ডের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকবে।
সব চাঁদা অবশ্যই ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে জমা দিতে হবে।
কোনো অবস্থাতেই নগদ হাতে চাঁদা হস্তান্তর করা যাবে না।
চাঁদা জমা দেওয়ার পর ব্যাংক প্রদত্ত জমা রসিদ দলের প্রধান কার্যালয়ে দাখিল করতে হবে।
একটি শাখা কমিটিতে মোট সদস্য সংখ্যা ৮৭ জন ধরা হয়েছে।
ঐ ৮৭ জনের মাসিক সম্মিলিত চাঁদা ৮,৫৫০ টাকা।
সংগ্রহকৃত টাকা ৫ জন নেতা মিলিয়ে স্বাক্ষরিত জমা রসিদসহ প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে দলের প্রধান কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।
দেশের প্রতিটি শাখা বা কমিটির জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য।
চাঁদার হার পরিস্থিতি অনুযায়ী বাড়ানো বা কমানো হতে পারে।
আর্থিকভাবে দুর্বল সদস্যরা আবেদন করলে তাদের চাঁদা আংশিক বা পুরোপুরি মওকুফ করা যেতে পারে।
আর্থিকভাবে সক্ষম সদস্যরা ইচ্ছা করলে অসচ্ছল সদস্যদের পক্ষ থেকে চাঁদা প্রদান করে সহযোগিতা করতে পারবেন।
কোনো সদস্য চাঁদা দিতে অক্ষম হলে সংশ্লিষ্ট কমিটির নেতার কাছে লিখিত আবেদন করতে হবে।
কমিটি আবেদন বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে।
একটানা ১ বছর চাঁদা না দিলে সদস্যপদ স্থগিত হবে।
একটানা ৩ বছর চাঁদা না দিলে সদস্যপদ ও কমিটি থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বহিষ্কার করা হবে।
সদস্যরা চাইলে এককালীন ১–৫ বছর পর্যন্ত অগ্রিম চাঁদা প্রদান করতে পারবেন।
বিশেষ নিয়ম: যদি কেউ একবারে ১২ বছরের চাঁদা প্রদান করে, তাকে আজীবনের জন্য চাঁদা মওকুফ করা হবে এবং তিনি আজীবন সদস্যপদ পাবেন।
দলের সদস্য হতে হলে নিচের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে:
অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে।
পরিবারের অভিভাবকের প্রত্যয়নপত্র প্রদান করতে হবে।
ইউনিয়ন পরিষদ বা ওয়ার্ড কমিশনারের পরিচয়পত্র, নাগরিক সনদ (জন্ম নিবন্ধন পত্র) এবং জাতীয় পরিচয়পত্র (ভোটার আইডি কার্ড) জমা দিতে হবে।
এসব কাগজপত্রের ফটোকপি সহ সাম্প্রতিক তোলা ফুল সাইজের ৫ কপি ও হাফ সাইজের ৫ কপি ছবি দিতে হবে।
তিন মাসের চাঁদা ও ভর্তি ফি প্রদান করতে হবে।
এরপর দলের ঘোষণাপত্র, গঠনতন্ত্র ও কর্মসূচি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে, বুঝে, স্বজ্ঞানে স্বাক্ষর করতে হবে।
তারপর দলের শপথ বাক্য পাঠ করতে হবে।
এই ধাপগুলো সম্পন্ন হলে আপনি দলের সদস্য পদ লাভ করবেন।
সদস্য হওয়ার ১৮ মাস পর আপনি দলের কর্মী পদ লাভ করতে পারবেন। তবে মনে রাখতে হবে—
দলের প্রয়োজন সংখ্যায় নয়, গুণে।
দল চায় নম্র, ভদ্র, নীতিবান, আদর্শবান, সাহসী, ধৈর্যশীল ও দেশপ্রেমিক সদস্য।
যেমন বলা হয়: দুষ্ট গোয়ালের চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো।
সদস্যপদের একটি কপি সংরক্ষিত থাকবে পাঁচটি স্তরে:
১. ইউনিয়ন কমিটি
২. ওয়ার্ড কমিটি
৩. থানা কমিটি
৪. জেলা কমিটি
৫. বিভাগীয় কমিটি
এভাবে প্রতিটি সদস্যের তথ্য সুরক্ষিতভাবে সংরক্ষিত থাকবে।
যেকোনো সদস্য তার আদর্শ, দক্ষতা, সততা, সাহসিকতা, ধৈর্য ও দেশপ্রেমের মাধ্যমে দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করে ধাপে ধাপে প্রমোশন পেতে পারেন।
দল থেকে শুরু করে দলের প্রধান পদ পর্যন্ত, এমনকি দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথও খোলা রয়েছে যোগ্য সদস্যদের জন্য।
প্রমোশন হবে গোপন ভোটের মাধ্যমে:
ইউনিয়ন কমিটি → থানা কমিটি
থানা কমিটি → জেলা কমিটি
জেলা কমিটি → বিভাগীয় কমিটি
বিভাগীয় কমিটি → কেন্দ্রীয় কমিটি
প্রত্যেক কমিটির তালিকা দেশের অন্যান্য সব কমিটির কাছে সংরক্ষিত থাকবে।
কেন্দ্রীয় কমিটির তালিকা থাকবে ইউনিয়ন পর্যন্ত, এবং ইউনিয়নের তালিকা থাকবে কেন্দ্রীয় কমিটি পর্যন্ত।
১। সদস্য প্রধান — ১১ জন
২। সদস্য সচিব — ৫১ জন
৩। সিনিয়র সদস্য — ৭৫ জন
৪। প্রবীণ সদস্য — ১০১ জন
৫। নবীন সদস্য — ১৫১ জন
৬। নবাগত সদস্য — ২৫১ জন
বিশেষ দ্রষ্টব্য: মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বা মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের সদস্য কমিটিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
১। সর্বনিম্ন এস.এস.সি পাশ হতে হবে।
২। নম্র, ভদ্র, নীতিবান, আদর্শবান, সৎ, সাহসী, ধৈর্যশীল এবং দেশপ্রেমিক হতে হবে।
৩। মানানসই ও সুঠাম দেহের অধিকারী হতে হবে।
৪। স্পষ্টভাবে কথা বলতে জানতে হবে এবং দৃঢ় কণ্ঠের অধিকারী হতে হবে।
সকল সদস্যের গোপন ভোটে সদস্য প্রধান নির্বাচিত হবেন।
সদস্যদের নিজেদের অর্থায়নে একটি অফিস নিতে হবে। সেই অফিসের চুক্তিনামা স্ট্যাম্পে প্রদান করতে হবে।
অফিসে অন্তত দুটি টেবিল এবং ১০টি চেয়ার থাকতে হবে।
প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিসে দলীয় পতাকা উত্তোলিত থাকতে হবে।
এই শর্তগুলো পূরণের পর দলের কাছে কমিটি অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে হবে।
যথাযথ বিষয়গুলো বিবেচনা করে গ্রাম বা ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি অনুমোদন এবং দলের রেজিস্ট্রেশন প্রদান করা হবে।
১। ছাত্র কমিটি
২। যুব কমিটি
৩। নারী কমিটি
৪। সুশীল কমিটি (৪৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের জন্য)
কমিটি আওতাধীন এলাকায় নিচের যে কোনো ঘটনা ঘটলে দ্রুত উপস্থিত হয়ে প্রাথমিক ব্যবস্থা নেবে:
মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যু বা অস্বাভাবিক মৃত্যু
অগ্নিকাণ্ড বা অগ্নি সংযোগ
মারামারি, হত্যা এবং হানাহানি
গুরুতর রোগে আক্রান্ত হলে জরুরি সহায়তা প্রয়োজন হলে ব্যবস্থা নেওয়া
সামাজিক বা অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে সৃষ্ট সমস্যা
অন্যান্য কোন প্রকার বিপদ, ক্ষতি বা অস্বস্তির ঘটনাই হোক না কেন
ঘটনার জায়গায় পৌঁছে সমস্যা অনুযায়ী প্রথমত: পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা ও প্রয়োজনীয় অনুদান বা ত্রাণ দেওয়া হবে। সম্ভব হলে দ্রুত ঝুঁকি বা ক্ষতির আশংকা মিটিয়ে নিরাপদ করবার ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্য কোনও সমস্যায় মীমাংসার চেষ্টা করা হবে—তবে মীমাংসার সময় নিম্নলিখিতগুলো করা যাবে না:
কোনো ব্যক্তির গায়ে হাত দেওয়া যাবে না
গালাগালি করা যাবে না
হুমকি-ধামকি দেওয়া যাবে না
ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা যাবে না
দলের প্রভাব ব্যবহার করে অন্যায় সুবিধা নেওয়া যাবে না
মীমাংসার জন্য অর্থ গ্রহণ করা যাবে না
যদি কমিটি নিজের পক্ষে সমস্যা সমাধান করতে না পারে, তাৎক্ষণিকভাবে দলের উর্ধতন নেতৃবৃন্দকে জানাতে হবে। এরপর ঠাণ্ডা মাথায়, ধৈর্য্য ও নম্রতার সঙ্গে, দলের আদর্শ অনুসরণ করে সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
যেকোনো ব্যক্তি যদি দলের অফিসে সমস্যা নিয়ে আসে, তাকে যথাযথ সম্মান প্রদান করতে হবে — অতিথি হিসেবে আপ্যায়ন করা হবে, তার অভিযোগ ভদ্র ও মনোযোগীভাবে শুনা হবে। যদি প্রয়োজন হয়:
অসহায় হলে তার যাতায়াতের খরচ প্রদান করতে হবে
ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করতে হবে
উভয় পক্ষকে ডেকে এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে
সমস্যা মীমাংসা না হলে আইনী সহযোগিতা প্রদান করতে হবে। তবে বল প্রয়োগ বা আর্থিকভাবে সমস্যা মেটানোর মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান করা যাবে না।
দলের সদস্য হওয়ার পর সর্বনিম্ন ১৮ মাস অতিক্রম করলে আপনি দলের কর্মী হওয়ার যোগ্য হবেন।
সদস্য হওয়ার সকল শর্ত পূরণের পর অতিরিক্তভাবে আপনাকে আরও একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে হবে। এই চুক্তিটি ১০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সম্পাদিত হবে।
চুক্তিতে উল্লেখ থাকবে—
আপনি দলের গঠনতন্ত্র মেনে চলবেন, দলের নিয়ম ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবেন না, এবং যদি দলের আদর্শবিরোধী কোনো কার্যকলাপের মাধ্যমে জনসাধারণের জান-মালের ক্ষতি বা রাষ্ট্রের সংবিধানবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত হন, তাহলে তার সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে আপনি বাধ্য থাকবেন।
আপনার দ্বারা কারও জান-মালের ক্ষতি হলে এবং আপনি ক্ষতিপূরণ প্রদান না করলে, স্ট্যাম্প চুক্তির নিয়ম অনুযায়ী দলের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা দায়ের করা হবে।
১। কর্মী প্রধান — ১১ জন
২। কর্মী সচিব — ৫১ জন
৩। সিনিয়র কর্মী — ৭৫ জন
৪। প্রবীণ কর্মী — ১০১ জন
৫। নবীন কর্মী — ১৫১ জন
৬। নবাগত কর্মী — ২৫১ জন
৭। কর্মী সদস্য — ১ থেকে ৩০০ জন
মোট: ৯৪০ জন।
এটি একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটির পরিসংখ্যান। তবে সর্বনিম্ন ৭ জন সদস্য থাকলেও কমিটি গঠন করা যাবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বা মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের কর্মী কমিটিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
সদস্য হওয়ার ১৮ মাস পর সকল সদস্য দলের কর্মী হিসেবে পরিণত হবেন।
কর্মীদের কমিটির মেয়াদ ৫ বছর, এবং শুধু কর্মীদের নয় — দলের সকল কমিটির মেয়াদই থাকবে ৫ বছর।
সদস্য প্রধান হওয়ার জন্য যে চারটি যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে,
সেই একই চারটি ধারা কর্মী কমিটির প্রধান নির্বাচনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
সদস্য কমিটির জন্য যে কার্যক্রম নির্ধারণ করা হয়েছে,
সেই একই কার্যক্রম কর্মীদের কমিটির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
যিনি দলের নেতা হিসেবে নির্বাচিত হবেন, তাকে বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব দলকে জমা দিতে হবে এবং ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে একটি চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে। চুক্তিপত্রে নিম্নলিখিত শর্তে অঙ্গীকার করতে হবে:
দলের নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর দলের নাম বা প্রভাব ব্যবহার করে ব্যক্তিগতভাবে অর্থ উপার্জন করা যাবে না।
দলের নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা অমান্য করে কোনো অনৈতিক ব্যবসা-বাণিজ্য করা যাবে না, যেমন: ঘুষ-প্রদান/গ্রহণ, দখলবাণিজ্য, টেন্ডার বানিজ্য, বদলি-ব্যবসা, অর্থপাচার, অবৈধ বাণিজ্য ইত্যাদি।
কিশোর গ্যাং বা সন্ত্রাসী গ্রুপ গঠন, খুন-খারাপি, চাঁদাবাজি, হামলা-ভাঙচুর বা অন্য কোন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করা যাবে না।
সংক্ষেপে, দলের গঠনতন্ত্রের নিয়ম-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে সমাজবিরোধী কোনো কাজ করা অনুমোদিত নয়।
যদি এই চুক্তি লঙ্ঘন করে আপনার কারণে কারো জান-মাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আপনি সেই ব্যক্তির পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবেন। ক্ষতিপূরণ না দিলে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী দলের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা দায়ের করা হবে।
সারা বাংলাদেশে দলীয় সকল কমিটি ও দলের সকল নেতার জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য।
বয়স: কমপক্ষে ৪০ বছর হতে হবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: যেকোন বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন থাকতে হবে।
ব্যক্তিগত গুণাবলি:
নম্র, ভদ্র, নীতিবান, আদর্শবান, সাহসী, ধৈর্যশীল, দৃঢ় কণ্ঠস্বরের অধিকারী, সুঠাম দেহের অধিকারী, দেশপ্রেমিক, জ্ঞানী এবং বুদ্ধিমান হতে হবে।
এই শর্তগুলো প্রযোজ্য হবে নিম্নলিখিত পদগুলোর জন্য:
থানা কমিটির প্রধান
জেলা কমিটির প্রধান
সিটি কর্পোরেশন কমিটির প্রধান
বিভাগীয় কমিটির প্রধান
কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান
স্থায়ী কমিটির প্রধান
উপরের পদগুলোর বাইরে অন্যদের ক্ষেত্রে শর্ত কিছুটা শিথিল থাকবে। যেমন:
বয়স সর্বনিম্ন ৩০ বছর হতে হবে
শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক (ডিগ্রি) পাস হতে হবে
বাকি সব শর্ত একইভাবে প্রযোজ্য থাকবে
বয়স: সর্বনিম্ন ৪৫ বছর হতে হবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রি থাকতে হবে। তবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি থাকলে তা দলের জন্য বিশেষভাবে উপকারী বিবেচিত হবে।
ভাষাগত দক্ষতা: অন্তত চারটি ভাষায় পারদর্শী হতে হবে—ইংরেজি, উর্দু, ফারসি এবং আরবি।
অন্যান্য যোগ্যতা:
নেতা হওয়ার যোগ্যতার সব শর্ত এখানেও প্রযোজ্য হবে।
দলের উপদেষ্টা পরিষদের প্রধানের জন্য নিচের যোগ্যতাগুলো প্রযোজ্য হবে:
শিক্ষাগত যোগ্যতা: প্রার্থীকে অবশ্যই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় অথবা ওয়াল্ডর্ফ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে হবে।
এছাড়া, নেতা হওয়ার যোগ্যতার শর্তসমূহও তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
স্থায়ী কমিটির প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার জন্য নিচের যোগ্যতাগুলো প্রযোজ্য হবে:
প্রার্থীকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করতে হবে।
প্রার্থীর বয়স ন্যূনতম ৪৫ বছর হতে হবে।
এছাড়া, নেতা হওয়ার যোগ্যতার শর্তসমূহও তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
অতিরিক্ত নির্দেশনা:
কেন্দ্রীয় কমিটি, স্থায়ী কমিটি, উপদেষ্টা কমিটি এবং সুশীল সমাজ কমিটির ১ থেকে ৫ নম্বর পর্যন্ত সদস্যদের অবশ্যই মাস্টার্স ডিগ্রি পাস থাকতে হবে।
অন্যান্য সদস্যদের ক্ষেত্রে স্নাতক (গ্র্যাজুয়েট) বা ডিগ্রি পাস থাকা বাধ্যতামূলক।
যিনি স্বদেশ বাংলা দলটি গঠন বা প্রতিষ্ঠা করেছেন, তিনি দলের কোনো পদে থাকতে পারবেন না।
তিনি শুধুমাত্র দলের সদস্য পদ গ্রহণ করবেন এবং আজীবন স্বদেশ বাংলা দলের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিবেচিত হবেন।
১. স্বদেশ বাংলা দলের প্রধান – পদবির নাম: স্বদেশ দলের প্রধান
২. কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান – পদবির নাম: স্বদেশ চেয়ারম্যান
৩. স্থায়ী কমিটির প্রধান – পদবির নাম: স্বদেশ মুখপাত্র
৪. উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান – পদবির নাম: স্বদেশ এমডি
৫. সুশীল সমাজের প্রধান – পদবির নাম: স্বদেশ প্রেসিডেন্ট
৬. বিভাগীয় কমিটির প্রধান – পদবির নাম: স্বদেশ বিভাগীয় প্রধান
৭. জেলা কমিটির প্রধান – পদবির নাম: স্বদেশ নেতা
৮. উপজেলা / ইউনিয়ন / ওয়ার্ড / পৌরসভা / সিটি কর্পোরেশন / মহানগর ও অন্যান্য কমিটির প্রধান – পদবির নাম: স্বদেশ নেতা
উল্লেখ্য, অন্যান্য দলীয় পদগুলির নাম কমিটির তালিকায় যেমন দেওয়া আছে, সেভাবেই বহাল থাকবে।
৯. নারী কমিটির প্রধান – পদবির নাম: স্বদেশ নেত্রী
পুরুষ কমিটিতে কোনো নারী সদস্য থাকতে পারবেন না, এবং নারী কমিটিতে কোনো পুরুষ সদস্য থাকতে পারবেন না।
অর্থাৎ, পুরুষ কমিটি ও নারী কমিটি সম্পূর্ণ আলাদা থাকবে।
পুরুষদের যতগুলো কমিটি থাকবে, নারীদেরও ততগুলো কমিটি থাকবে।
প্রত্যেক নারী কমিটিতে ৩১ জন সদস্য এবং প্রত্যেক পুরুষ কমিটিতে ৫১ জন সদস্য থাকবে।
একবার বর্ণনা করা হলেও, পুনরায় উল্লেখ করা হচ্ছে যে —
যিনি স্বদেশ বাংলা দলের প্রতিষ্ঠাতা, তিনি স্বদেশ বাংলা দলের প্রধান হতে পারবেন না এবং দলের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদেও থাকতে পারবেন না।
তবে তিনি স্বদেশ বাংলা দলের সদস্য পদ গ্রহণ করে আজীবন দলের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সম্মানজনক অবস্থান বজায় রাখবেন।
দলের প্রতিষ্ঠাতার জ্ঞান, বিবেক, বুদ্ধি, পরামর্শ এবং সকল দিকনির্দেশনা দলের প্রত্যেক সদস্য মানতে ও অনুসরণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।
অতিরিক্ত নির্দেশনা:
স্বদেশ বাংলা দলের প্রতিষ্ঠাতা, রাষ্ট্রীয়ভাবে দল ক্ষমতায় এলে, রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
স্বদেশ বাংলা দলের শীর্ষ পর্যায়ে মোট ৪টি কমিটি থাকবে:
১. সুশীল সমাজ কমিটি – এই কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির কার্যনির্বাহী ক্ষমতা এক।
২. উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি – এই কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির কার্যনির্বাহী ক্ষমতা এক।
৩. স্থায়ী কমিটি – এই কমিটি ও কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী ক্ষমতা এক।
৪. কেন্দ্রীয় কমিটি – এই কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির কার্যনির্বাহী ক্ষমতা এক।
এই চারটি কমিটি একে অপরের কাছে দলীয় গঠনতন্ত্রের নিয়ম-শৃঙ্খলা ভঙ্গের ক্ষেত্রে জবাবদিহির জন্য দায়বদ্ধ থাকবে।
এই চারটি কমিটির চারজন প্রধানের মধ্যে গোপন ভোটের মাধ্যমে যিনি বিজয়ী হবেন —
তিনিই দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন।
যিনি দ্বিতীয় স্থান অর্জন করবেন, তিনি রাষ্ট্রপতি হতে পারবেন।
তবে, দলের প্রধান চাইলে নিজ ইচ্ছায় দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি পদে দায়িত্ব নিতে পারবেন।
যে কমিটি থেকে দলের প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন, তিনি কোনো অনৈতিক কাজ করলে তার নিজ কমিটির কাছে জবাবদিহি করা বাধ্যতামূলক।
শীর্ষ পর্যায়ের অন্য যেকোনো কমিটিও জবাব চাইতে পারবে।
যদি সন্তোষজনক জবাব না পাওয়া যায়, তবে চারটি কমিটির সকল সদস্যের অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে তাকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা যাবে।
স্বদেশ বাংলা দলের সংগঠন কাঠামো নিম্নলিখিত ১২টি স্তরের কমিটি নিয়ে গঠিত হবে:
১. গ্রাম বা মহল্লা কমিটি (শহর ভিত্তিক হলে মহল্লা)
২. ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড কমিটি (শহর ভিত্তিক হলে ওয়ার্ড)
৩. থানা কমিটি
৪. জেলা কমিটি
৫. পৌরসভা কমিটি
৬. সিটি কর্পোরেশন কমিটি
৭. বিভাগীয় কমিটি
৮. কেন্দ্রীয় কমিটি
৯. স্থায়ী কমিটি
১০. উপদেষ্টা কমিটি
১১. সুশীল সমাজ কমিটি
১২. নারী কমিটি (সম্পূর্ণ আলাদা)
প্রত্যেক মূল কমিটির অধীনে থাকবে মোট ৫টি উপ-কমিটি, নিম্নরূপঃ
১. ছাত্র কমিটি
২. যুবক কমিটি
৩. শ্রমিক কমিটি
৪. জেলে, তাঁতি, কুমার, কৃষক, ড্রাইভার ও প্রতিবন্ধীসহ অন্যান্যদের সমন্বয়ে একটি কমিটি
৫. সুশীল কমিটি – যাদের বয়স ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে, তারা এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হবেন।
এই ৫টি উপ-কমিটির সদস্যদের মধ্য থেকে যোগ্যতা যাচাই ও বাছাইয়ের মাধ্যমে
গঠন করা হবে জেলা কমিটি।
একই পদ্ধতিতে অন্যান্য সব কমিটিও ধাপে ধাপে গঠিত হবে।
১. দলের প্রধানের একক ইচ্ছায় কাউকে বহিষ্কার করা যাবে না।
২. যে ব্যক্তি যে কমিটিতে থাকবেন, তাকে বহিষ্কার করার ক্ষমতা শুধুমাত্র সেই কমিটির প্রধানের থাকবে।
তবে, বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হলে কমিটির মোট সদস্যের ৬০% এর লিখিত সমর্থন থাকতে হবে।
যদি কোনো সদস্যকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়, তাহলে তিনি উচ্চতর (সিনিয়র) কমিটির কাছে লিখিত আবেদন করে বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাতে পারবেন।
এই নিয়মটি গ্রাম বা মহল্লা কমিটি থেকে বিভাগীয় কমিটি পর্যন্ত প্রযোজ্য থাকবে।
৩. শীর্ষ পর্যায়ের বাকি চারটি কমিটি (যেমন কেন্দ্রীয়, স্থায়ী, উপদেষ্টা ও সুশীল সমাজ কমিটি) থেকে কাউকে বহিষ্কার করার নিয়ম ভিন্ন হবে।
এই চারটি কমিটির যেকোনো একটি কমিটির সদস্যকে বহিষ্কার করতে হলে সব চারটি কমিটির মোট সদস্যের মধ্যে ৬০% সদস্যের লিখিত সম্মতি আবশ্যক হবে।
অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি, কোনো দলের প্রভাব, অন্য রাষ্ট্রের নির্দেশনা, গোয়েন্দা সংস্থার পরামর্শ বা একক ক্ষমতার ভিত্তিতে এই চার কমিটির কাউকেই বহিষ্কার করা সম্ভব নয়।
স্বদেশ বাংলা দলের প্রতিষ্ঠাতার অবর্তমানে, দলের গঠনতন্ত্র বা ঘোষণাপত্রের কোনো ধারা, উপ-ধারা, লাইন, শব্দ বা বাক্যাংশ কোনোভাবেই পরিবর্তন করা যাবে না।
এমনকি শুদ্ধ ভাষা প্রয়োগের উদ্দেশ্যে ভাষা পরিবর্তন করাও নিষিদ্ধ।
এর কারণ হলো —
স্বদেশ বাংলা দলের প্রতিষ্ঠাতা সহজ, সরল ও খাঁটি বাংলা ভাষা ব্যবহার করেছেন, যাতে দলের সদস্যরা অনিয়ম ও বিভ্রান্তিমূলক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে পারেন।
“শুদ্ধ ভাষা” যেমন – নির্বাহী আদেশ, উপরের নির্দেশনা – এই ধরনের শব্দ সাধারণ মানুষ সহজে বোঝে না।
কারণ, এখানে বোঝা যায় না কে “নির্বাহী আদেশ” দিয়েছেন বা “উপরের নির্দেশনা” কার পক্ষ থেকে এসেছে।
এই অদৃশ্য নির্দেশদাতার ধারণাই সমাজে অন্যায়, অনিয়ম ও অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
তাই দলের গঠনতন্ত্রে শুদ্ধ ভাষা ব্যবহার করা হয়নি।
তবে, স্বদেশ বাংলা দলের প্রতিষ্ঠাতার অবর্তমানে, গঠনতন্ত্রের বানান, আকার, ই-কার, উ-কার সংক্রান্ত ভুল বা টাইপোগ্রাফিক ত্রুটি শুধুমাত্র সংশোধন করা যাবে।
বাংলাদেশের নাগরিক ব্যতীত কোনো বিদেশি নাগরিক বা দ্বৈত নাগরিক (দো-ভাষী) ব্যক্তিকে স্বদেশ বাংলা দলের কোনো কমিটিতে বা পদে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না।
স্বদেশ বাংলা দলের সদস্য হতে পারবেন —
কৃষক, জেলে, তাঁতি, কুমার, প্রতিবন্ধী, হকার, বাস চালক, রিকশা চালক, ড্রাইভার এবং অন্যান্য পেশার সাধারণ মানুষ।
তাদের যোগ্যতা, মেধা, জ্ঞান, ধৈর্য, সাহস, দলের জন্য ত্যাগ ও দেশপ্রেমের ভিত্তিতে
ধাপে ধাপে দলের পদোন্নতি হতে পারে এবং সেক্ষেত্রে তারা
স্বদেশ বাংলা দলের প্রধান, এমনকি দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী পদেও দায়িত্ব নিতে পারবেন।
স্বদেশ বাংলা দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত না হওয়া পর্যন্ত দলের সব কার্যক্রমের দায়িত্ব ও ক্ষমতা
সম্পূর্ণভাবে স্বদেশ বাংলা দলের প্রতিষ্ঠাতার অধীনে থাকবে।